বাংলাহান্ট ডেস্ক: কলকাতা মেট্রো রেলওয়ের এই মুহূর্তের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হল এস্প্ল্যানেড-হাওড়া মেট্রো। শুধু কলকাতা মেট্রোর (Kolkata Metro Railway) ইতিহাসেই নয়, ভারতেও এই প্রথম জলের তলা দিয়ে চলবে মেট্রো। স্বভাবতই মেট্রো কতৃপক্ষ থেকে সাধারণ মানুষ, সবার মধ্যেই উচ্ছ্বাস ছিলই। কয়েক মাস ধরেই মেট্রোর তরফে জানানো হচ্ছিল, আর মাত্র কয়েক দিন, তারপরেই সম্পূর্ণ হয়ে যাবে সব কাজ। অবশেষে চলে এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, আগামী রবিবার প্রথমবারের জন্য হবে গঙ্গার তলা দিয়ে মেট্রো রেলের ট্রায়াল। এই প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে জলের তলা দিয়ে গড়াবে ট্রেনের চাকা। গঙ্গার পশ্চিম তীরে অবস্থিত হাওড়া স্টেশন কমপ্লেক্সের সঙ্গে পূর্ব তীরের আর্মেনিয়ান ঘাটকে যুক্ত করেছে এই ‘আন্ডারওয়াটার টানেল’। এখানেই আগামী রবিবার পরীক্ষা করা হবে মেট্রো রেলের।
কলকাতা মেট্রোর সূত্রে খবর, এই রুটে পরিষেবা চালু হলে হাওড়া স্টেশন বিশ্বের অন্যতম গভীরতম স্টেশনের তালিকায় নাম লেখাতে চলেছে। মাটির ৩০ মিটার গভীরে অবস্থিত হাওড়া স্টেশন। অন্যদিকে, এসপ্ল্যানেড স্টেশনটি নর্থ-সাউথ করিডরের সঙ্গে ইস্ট-ওয়েস্ট করিডরের ইন্টারচেঞ্জিং স্টেশন হবে। অর্থাৎ উভয় দিক থেকেই যাত্রীরা এখানে এসে ট্রেন পালটে অন্য দিকে যেতে পারবেন।
সূত্রের খবর, হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ৪.৮ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ইতিমধ্যেই ৬ কোচের দু’টি ট্রেন তৈরি করা হয়েছে। শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড অবধি ২.৫ কিলমিটার পথের কাজ শেষের আগেই গঙ্গার নীচ দিয়ে ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তাই আগামী ৯ এপ্রিল গঙ্গার নীচে প্রথম ট্রায়াল রান হবে মেট্রোর। জানা গিয়েছে, রবিবারের পরীক্ষামূলক দৌড়ের জন্য সল্টলেক ডিপো থেকে মেট্রোর রেকগুলিকে পূর্বমুখী টানেল দিয়ে হাওড়া ময়দান অবধি নিয়ে যাওয়া হবে।
কিন্তু শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেডের মাঝের টানেলে বারবার ধস নামার কারণে সেটি এখনও ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কিন্তু পূর্বমুখী টানেলে কোনও সমস্যা নেই। সল্টলেক ডিপো থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত রেক নিয়ে যাওয়ার জন্য অস্থায়ী ভাবে রেললাইন পাতা হয়েছে। কিন্তু এই টানেলে বিদ্যুৎ নেই। তাই এই রেকগুলিকে ধাক্কা দেবে ব্যাটারি চালিত লোকো ইঞ্জিন। কিন্তু এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া অবধি বিদ্যুতেই চলবে ট্রেন।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ট্রায়াল রান সফল হলে আগামী ৬ মাস ধরে নানা পরীক্ষা চালানো হবে এই রুটে। তারপর ডিসেম্বরেই গঙ্গার নীচ দিয়ে এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান রুটে যাত্রী পরিষেবা চালু হতে পারে। কিন্তু শিয়ালদহ এবং এসপ্ল্যানেডের মাঝে কবে পরিষেবা চালু হবে, সে প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, জলের ১৩ মিটার নীচে অবস্থিত নদীর তট। তারও ১৩ মিটার গভীরে রয়েছে এই টানেল। ট্রায়াল রান সফল হলে যাত্রী পরিষেবার গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির উপর। ভারতীয় রেল জানিয়েছে, রেকর্ড ৬৬ দিনে গঙ্গার নীচের এই টানেল তৈরি হয়েছে।