বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গার্ডেনরিচ কাণ্ডের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের একাংশ ভেঙে পড়ে প্রাণ হারান বহু মানুষ। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে বেআইনি নির্মাণের কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। খোদ কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) মেয়রের বিধানসভা কেন্দ্রে এমন ঘটনা অবাক করেছিল অনেককে। সেই সঙ্গেই বেআইনি নির্মাণ নিয়ে মুখ পুড়েছিল KMC-র।
কলকাতা পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের কাজকর্ম নিয়েও বহুল চর্চা হয়েছিল। শনিবারই এই ঘটনার জেরে পুরসভার তিনজন ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হয়। এবার আরও একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হল। বেআইনি নির্মাণে (Illegal Construction) আটকাতে এবার কড়া আইনের খসড়া তৈরি করে ফেলল KMC। জানা যাচ্ছে, গত ৭ দিন ধরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) এবং পুরসভার একাধিক বিভাগের শীর্ষস্তরের আধিকারিকরা বৈঠক করে এই খসড়া তৈরি করেছেন।
এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার এই উচ্চপদস্থ আধিকারিক জনপ্রিয় এক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত KMC-র একটি পুরনো আইন আছে। এবার সেই আইনটিকেই সংশোধন করে আরও কড়া আইনে রূপান্তরিত করার প্রস্তাব পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে পাঠানো হবে। সেখানে সেটি পর্যালোচনা করা হবে। এরপর তা পাঠানো হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) দফতরে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে অনুমোদন পেলেই আইন দফতরকে বিল তৈরি করার কথা বলা হবে।
আরও পড়ুনঃ মাত্র ২২৫ টাকার জন্য দোষী সাব্যস্ত! ১৮ বছর পর উত্তম কুমারের মান ফেরাল হাইকোর্ট
আগামী জুলাই-আগস্ট মাসে বিধানসভার বাদল অধিবেশন বসবে। সেখানে বিলটি পেশ করা হবে বলে খবর। বিধানসভায় বিলটি পাশ হয়ে গেলে পূর্ণাঙ্গ আইন হয়ে যাবে। জানা যাচ্ছে, এই আইন যদি চালু হয়ে যায় তাহলে প্রোমোটার এবং জমির মালিক, দু’জনের বিরুদ্ধেই কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে কলকাতা পুরসভা। সেই সঙ্গেই এই আইনে বেআইনি নির্মাণ প্রমাণ হলে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের কথাও উল্লিখিত আছে বলে খবর।
এদিকে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত এই বিল পাশের আগে যদি অবৈধ নির্মাণ চোখে পড়ে তাহলেও কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সেটা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করেছে পুরসভা। জানা যাচ্ছে, বিধানসভায় এই বিল পাশ হওয়ার আগে যদি বড়সড় কোনও বেআইনি নির্মাণ চোখে পড়ে তাহলে অধ্যাদেশ জারি করে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবনাচিন্তা করছে KMC কর্তৃপক্ষ। কলকাতা পুরসভার এহেন পদক্ষেপের ফলে বেআইনি নির্মাণে অনেকখানি রাশ টানা যাবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।