আর মাত্র ক’দিনের অপেক্ষা, তারপরেই দুর্গাপুজো। কলকাতার সর্ববৃহৎ উৎসবকে ঘিরে প্রতিবারই তৈরি হয় নানা জটিলতা। বৃহৎ জনসমাগম, ভিড় নিয়ন্ত্রণ, ট্রাফিক সমস্যা, শব্দদূষণ থেকে শুরু করে চাঁদা নিয়ে অভিযোগ। এগুলো সামলাতে প্রশাসনকে আগে থেকেই কড়া প্রস্তুতি নিতে হয়। সেই কারণেই এ বার উৎসব শুরুর আগেই উদ্যোগী হল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। কমিশনার মনোজ বর্মা আগামী ১০ সেপ্টেম্বর, বুধবার সন্ধ্যায় আলিপুরের ধনধান্য অডিটোরিয়ামে ডাকলেন শহরের বড় পুজো উদ্যোক্তাদের বৈঠকে।
১৫০০ পুজো উদ্যোক্তাকে নিয়ে বৈঠক কমিশনারের (Kolkata Police)
লালবাজার (Kolkata Police) সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের ১০টি পুলিশ ডিভিশনের অন্তর্গত নির্বাচিত বড় পুজো কমিটি থেকে দু’জন করে প্রতিনিধি এই বৈঠকে যোগ দেবেন। সব মিলিয়ে উপস্থিত থাকবেন প্রায় ১৫০০ উদ্যোক্তা। শুধু উদ্যোক্তারাই নন, কলকাতা পুরসভার আধিকারিক, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসি, দমকল দপ্তর, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং প্রশাসনের বিভিন্ন শাখার প্রতিনিধিরাও থাকবেন সভায়। একই সঙ্গে কলকাতার প্রতিটি থানার ওসি, এসি ও ডিসি পর্যায়ের আধিকারিকদেরও হাজির থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কি নিয়ে হবে আলোচনা?
এই বৈঠকে মূলত আলোচিত হবে অনলাইনে পুজোর (Durga Pujo 2025) অনুমতি নেওয়ার সহজীকৃত প্রক্রিয়া, হাইকোর্টের নির্দেশিকা মেনে চলা, চাঁদা আদায়ের নিয়মনীতি, প্যান্ডেল নির্মাণের সময় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ, প্রতিমা বিসর্জনের সময়সূচি এবং ভিড় সামলাতে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা। এছাড়া পুজোর দিনগুলিতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশের পাশাপাশি দমকল, বিদ্যুৎ দপ্তর, পুরসভা, দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের মতো দপ্তরের ভূমিকা নিয়েও সমন্বয় ঘটানো হবে।
পুলিশ (Kolkata Police) সূত্রে খবর, কমিশনার মনোজ বর্মা বৈঠকে উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দেবেন যে আদালতের নির্দেশিকা এবং প্রশাসনিক বিধি অমান্য করলে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না, বরং নেওয়া হবে কঠোর পদক্ষেপ। একই সঙ্গে উদ্যোক্তাদের পরামর্শ ও সমস্যা শুনে তার সমাধানের দিকেও নজর দেবেন তিনি।
কলকাতার দুর্গাপুজো (Durga Pujo 2025) কমিটিগুলির সংগঠন ফোরাম ফর দুর্গোৎসব-এর সহ-সভাপতি শাশ্বত বসু জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের বৈঠকে আমাদের করণীয় সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছেন। তার পরেও কমিশনার যখন ডাকছেন, আমরা অবশ্যই যাব। পুলিশ প্রশাসনের (Kolkata Police) সঙ্গে আলোচনায় উৎসব আরও সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ ভাবে আয়োজন করা সম্ভব হবে।”
আরো পড়ুনঃ কর নীতিতে বৈষম্য! সিগারেটে বাড়লেও বিড়ির ক্ষেত্রে কমল শুল্ক, প্রশ্নের মুখে কেন্দ্র
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বৈঠক শুধুমাত্র পুজোর নিয়মকানুন মানার প্রক্রিয়া নয়, বরং শহরের সবচেয়ে বড় উৎসবকে সফল করার জন্য প্রশাসন ও উদ্যোক্তাদের যৌথ প্রচেষ্টার মঞ্চ। দুর্গাপুজোকে (Durga Pujo 2025) ঘিরে কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এই ধরনের প্রস্তুতি শহরের মানুষের নিরাপত্তা ও উৎসবের আনন্দকে আরও কয়েকগুন বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।