বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আচমকা ত্রিপুরা মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বিপ্লব দেবের ইস্তফা আর তাতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। সেই আঁচ বাংলাতেও এসে পড়লো। এদিন রাজ্যপাল এস এন আর্য্যর কাছে ইস্তফা পত্র জমা দিয়ে আসেন বিপ্লব দেব আর এই খবর শিরোনামে আসতেই হতবাক হয়ে পড়ে সকলে। এমনকি, বিরোধী দলগুলির কাছেও অনেকটা শকিং হিসেবেই উঠে আসে বিপ্লব দেবের এহেন পদক্ষেপ। তবে, ত্রিপুরায় বিজেপির অন্দরে গোষ্ঠীদ্বন্দের তত্ত্বকেই এদিন তুলে ধরে তৃণমূল কংগ্রেস দল।
বিপ্লব দেবের ইস্তফা নিয়ে যখন গোটা দেশে শোরগোল পড়ে গিয়েছে, সেই সময় বাংলায় বসে কুণাল ঘোষ দাবি করেন, “বিজেপির অন্দর পুরোটাই গোষ্ঠীবাজিতে ভরে গিয়েছে আর সেই কারণেই ত্রিপুরায় তাদের এই অবস্থা। বিজেপি কখনোই ত্রিপুরাবাসী এ উন্নয়নের কথা চিন্তা করেনি। পুরোটাই তাদের ক্ষমতা দখলের খেলা। মুখ্যমন্ত্রীর মেয়াদ শেষ না হবার আগেই যারা পদত্যাগ করে দেয়, তারা আর যাই হোক না কেন, মানুষের কাছে পৌঁছতে পারেনা। ত্রিপুরা জনসাধারণের কাছে বিজেপি সরকার যে আর গ্রহণযোগ্য নেই, সেটাই প্রমাণ করলো বিপ্লব দেবের এই ইস্তফা।”
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস দলের বিপুল পরিমানে জয়লাভের পরেই তাদের পাখির নজর হয়ে ওঠে ত্রিপুরা। পরবর্তীতে, সর্বশক্তি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস দল ত্রিপুরায় ক্ষমতা লাভের আশায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। যদিও সম্প্রতি সেখানকার ভোটে তৃণমূল দল খুব ভালো ফল করতে পারেনা, তবুও এদিনের এই কাণ্ডের পর নতুন করে আশা দেখতে আরম্ভ করেছে তারা। এমনকি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস দল ক্ষমতায় আসবে বলে মন্তব্য করেন কুণাল ঘোষ।
তিনি বলেন, “আগামী সময় ত্রিপুরায় সরকার গড়বে তৃণমূল কংগ্রেস। আমরা মাত্র কিছুদিন লড়াই করে সেখানকার ভোটে 24 শতাংশ ভোট পাই। আগামীতেও আমরা ক্ষমতায় আসবো। ধীরে ধীরে ত্রিপুরার মানুষ বিজেপির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছে। সেখানকার জনসাধারণ বর্তমানে বাংলার লক্ষ্মী ভান্ডার নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করতে শুরু করেছে।”
তবে তৃণমূলের এই দাবি যে কখনোই সত্যি হবে না, সে নিয়ে এদিন মত প্রকাশ করেন ত্রিপুরা বিজেপির এক বিধায়ক। তিনি জানান, “বিপ্লব দেবের এই ইস্তফা আমাদের দলের ভিতরের ব্যাপার। দলের নির্দেশেই তা হয়েছে। বিপ্লব দেবকে হয়তো ভবিষ্যতে দলের অন্য কোন কাজে দেখা যেতে পারে। তবে আমি বলে রাখি, আগামী বিধানসভাতেও আমরা জয়লাভ করবো এবং ত্রিপুরার সরকার গড়বো।”
প্রসঙ্গত, এদিন বিপ্লব দেবের ইস্তফার পর একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকের মতে, তাঁর এই সিদ্ধান্ত দলকে দুর্বল করে দেবে। তবে এসব কিছুকেই পাত্তা দিতে নারাজ বিজেপি। সূত্রের খবর, ত্রিপুরার নতুন মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন জিষ্ণু দেববর্মা, যিনি আবার এই মুহূর্তে রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী পদে নিযুক্ত রয়েছেন।