বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এবং আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের ঘটনায় আদালত অবমাননার রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত। আগেই হাইকোর্টের নির্দেশে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) সহ উচ্চ প্রাথমিকের বিক্ষোভকারী সাত জন চাকরিপ্রার্থীর বিরুদ্ধে রুল জারি হয়েছে। এবার কলকাতা হাই কোর্টের জারি করা রুল নোটিস পেলেন তৃণমূল কুণাল ঘোষ।
অস্বস্তি আরও বাড়ল কুণালের | Kunal Ghosh
সূত্রের খবর, নারকেলডাঙা থানার মাধ্যমে নোটিস পাঠিয়েছে হাইকোর্ট। নোটিসে বলা হয়েছে, আদালত অবমাননার অভিযোগ জানিয়ে তাঁকে কারণ দর্শাতে হবে। কেন, কোন যুক্তিতে তাঁকে জেলে পাঠানো হবে না কিংবা শাস্তি দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে ওই নোটিসে।
বলা হয়েছে, আগামী ১৬ই জুন বেলা সাড়ে ১২টায় হাই কোর্টের তিন সদস্যের বিশেষ বেঞ্চের সামনে উত্তর-সহ সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে তৃণমূল মুখপাত্র কুণালকে। আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি আদালত থেকে বেরতে পারবেন না বলে স্পষ্ট করা হয়েছে। তাহলে কি এবার শাস্তির খাড়া নামবে কুণালের উপর?
সূত্রের খবর, আইন অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত হলে হাই কোর্ট থেকে সরাসরি কুণাল ঘোষকে জেলে পাঠানোর সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য ও আইনজীবীদের উপর হামলার ঘটনায় আগেই রুল জারি করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং রাজর্ষি ভরদ্বাজের বৃহত্তর বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, গত ২৫ এপ্রিল কর্মশিক্ষা – শারীরশিক্ষায় অতিরিক্ত শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানির শ্লথ গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের (Bikash Ranjan Bhattacharya) চেম্বারের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।
আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত সহ বেশ কিছু আইনজীবীকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হাইকোর্ট চত্বরেই।
হাইকোর্টের বিচারপতিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ায় ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কিছু আইনজীবী। তাতে বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়,বিচারপতি সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজকে নিয়ে বিশেষ বেঞ্চ গড়ে দেন প্রধান বিচারপতি।
গোটা বিষয়কে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বলে উল্লেখ করে হাইকোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য আদালতের অবমাননা ফৌজদারি অপরাধ। ভবিষ্যতে যাতে এরম ঘটনা আর না হয় সুনিশ্চিত করার জন্য পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। অভিযুক্তদের অনুসন্ধান করে রিপোর্ট দেওয়ায় জন্য কমিশনারকে নির্দেশ।
আরও পড়ুন: অস্বস্তিকর গরমের মধ্যেই দক্ষিণবঙ্গে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস, শনিতে কোন কোন জেলা ভিজবে?
উল্লেখ্য, সেইদিন বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ দেখানোর পর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল।
সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএম-এর সব নেতাদের ছবি দেখান। কুণালের প্রশ্ন ছিল, এক সময় যে বিকাশ ভট্টাচার্যরা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন মামলা লড়ার জন্য, এখন কেন তাঁরাই চাকরি কাড়তে মরিয়া হয়ে পড়েছে? এই সময়ই কুণাল বলেন, “আর বিচারপতির কিছু কিছু সিপিএমের আইনজীবীকে দেখলে কী হয় জানি না। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখেছি। ভগবান-ভগবান-তারপর হল সাংসদ।” এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই হয় মামলা।
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/live/tI-0DtOtxSc?si=tIsuBr_anIyHqGkD
প্রাথমিক ভাবে এটা ক্রিমিনাল কন্টেমট বলে মনে করে আদালত। হলফনামা চাওয়া হয়। সন্তুষ্ট না হলে রুল জারি করা হবে বলা হয়েছিল। এরপর হাই কোর্ট অভিযুক্ত সকলের বিরুদ্ধে রুল জারি করে। এবার সেই জারি করা রুল নোটিস পেলেন কুণাল।