বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বারো বছর আগে সারদা কেলেঙ্কারি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। আজ বারো বছর পর একই দিনে সেই দিনের স্মৃতি আবার সামনে এনে একটি দীর্ঘ পোস্ট লিখলেন তিনি। নিজের জীবনের বড় ধাক্কা, জেল-হেফাজতের দিন, মামলা, আবার কাজে ফিরে আসা, সব কিছুর স্মৃতি এদিন নিজের ভাষায় লিখে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
কীভাবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন কুণাল (Kunal Ghosh)?
আজ ২৩ নভেম্বর। সারদা কেলেঙ্কারি মামলায় কুণাল ঘোষের গ্রেপ্তারের বারো বছর পূর্তি দিন। এদিন নিজের অভিজ্ঞতার কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। একটি পুরনো ছবি আজ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, “23/11/2013, গ্রেপ্তারের কিছুক্ষণ আগে। বিধাননগর দক্ষিণ থানা। বারো বছর আগের ছবি”। এরপর ওই পোস্টে কুণাল লেখেন, “সারদা তদন্ত প্রভাবিত হচ্ছে বলে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এরপর আর আমাকে আর বেরোতে দেওয়া হয়নি।” এদিন কুণাল জানান, কোনো মামলা না থাকা সত্ত্বেও সেখানেই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক মামলা যোগ হয়।
কুণাল ঘোষ এদিন আরও লেখেন যে, গ্রেপ্তারের পর তাঁর জীবন কার্যত ভেঙে পড়ে। পরিবার-পরিজন বিপর্যস্ত ছিলেন। যদিও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন মামলায় তিনি ধীরে ধীরে জামিন পান। যে মামলায় প্রথম তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়, সেই মামলায় তিনি শেষমেশ অভিযোগমুক্তও হন। আজ বারো বছর পর জীবনের কঠিন অধ্যায় পেরিয়ে তিনি ফের লেখালিখি, চাকরি, সাংবাদিকতা, রাজনীতি ও সামাজিক কাজে নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছেন। এই প্রসঙ্গে এদিন কুণাল লেখেন, “ঈশ্বরের আশীর্বাদে এখন আবার পারফরম করছি, ধ্বংসস্তুপ থেকে উঠে, লেখা, চাকরি, সাংবাদিকতা, রাজনীতি, জনসংযোগ, ক্লাব, সামাজিক নানা কর্মযজ্ঞ। আনুগত্যের প্রমাণও প্রশ্নাতীতভাবে দিয়েছি। ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখি। অনেক কাজ বাকি। অনেক কিছু দেখা বাকি।”
উল্লেখ্য, সারদা কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৩ সালে বিধাননগর পুলিশ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) কে গ্রেপ্তার করে। তখন তিনি তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ। ওই সময় বিধাননগর কমিশনারেটের প্রধান ছিলেন রাজীব কুমার এবং গোয়েন্দাপ্রধান ছিলেন অর্ণব ঘোষ। গ্রেপ্তারের আগেই কুণাল সাংবাদিক বৈঠকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিযোগ করেছিলেন যে আসল অভিযুক্তদের আড়াল করা হচ্ছে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে পরে সিবিআই তদন্ত নিজের হাতে নেয় এবং কুণালকে (Kunal Ghosh) হেফাজতে নেয়। ২ বছর ১০ মাসেরও বেশি সময় ধরে জেলে থাকার পর ২০১৬ সালের অক্টোবরে জামিন পান তিনি।
কিন্তু তার আগে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর গভীর রাতে প্রেসিডেন্সি জেলের সেলে ঘটে আরেক ঘটনা। পুলিশের অভিযোগ, কুণাল (Kunal Ghosh) বিপুল পরিমাণ ঘুমের ওষুধ খান। তাঁকে দ্রুত SSKM হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্টমাক-ওয়াশসহ চিকিৎসা করা হয়। পরে হেস্টিংস থানায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। সরকারি আইনজীবীর দাবি, এই মামলায় পুলিশ অভিযোগ প্রমাণ করতে পেরেছে। তাই আদালতে ৩০৯ ধারায় রায় দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ নজরে ২৬-এর নির্বাচন, কর্মসংস্থান বাড়াতে আসানসোলে নতুন শিল্প পার্ক, ঘোষণা করল নবান্ন
প্রসঙ্গত, প্রায় তিন বছর হাজতবাস, জামিন এবং ধীরে ধীরে রাজনৈতিকমঞ্চে ফিরে আসা, সব মিলিয়ে এক সময় অনেক ওঠা পড়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে কুণাল ঘোষকে। সমস্ত প্রতিকূলতা পার করে ধীরে ধীরে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন তিনি। আজ বারো বছর পর তাঁর গ্রেপ্তারের দিনকে স্মৃতিতে রেখে ‘শপথের দিন’ বলে উল্লেখ করেছেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। বর্তমানে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দলের মুখপাত্র হিসেবে রয়েছেন তিনি।












