বাংলাহান্ট ডেস্ক : ‘কখনও যদি দেখা হয় বসন্তের শেষ বিকেলে, তুমিও কি…’, কুণাল ঘোষর অবস্থা অনেকটা একই রকম। মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের (Dharmendra Pradhan) সঙ্গে হঠাৎই দেখা তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh)। এই নিয়ে রীতিমতো শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে। এমন কি প্রশ্ন উঠছে শেষ পর্যন্ত কুণালও কি…?
ঠিক কী ঘটেছিল সে রাতে? কুণাল ঘোষ থাকেন উত্তর কলকাতার সুকিয়া স্ট্রিটের একটি ফ্ল্যাটে। ওই আবাসনেরই তৃতীয় তলায় সোহম মণ্ডল নামের এক আইনজীবী থাকেন। তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সম্পর্ক বেশ ভালো। কলকাতায় এলেই নাকি সোহমের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করেন তিনি। মঙ্গলবার তাঁর ফ্ল্যাটেই নৈশভোজে এসেছিলেন ধর্মেন্দ্র প্রধান ও বিজেপির নেতা কল্যাণ চৌবে।
ধর্মেন্দ্র, কল্যাণদের থালায় তখন সবে লুচি আর ছোলার ডাল পড়েছে। বাটিতে সাজানো রয়েছে ধোকার ডালনা ও পনির। ঠিক সেই সময় হঠাৎই সোহমের ফ্ল্যাটে ‘উঁকি’ মারেন কুণাল। তিনি যে থাকেন ঠিক তার উপরের তলাতেই। ভিতরে ঢুকে কুণাল দেখেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছোলার ডালে লুচি মাখাতে ব্যস্ত। এরপর যথারীতি সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরে কিছুক্ষণের মধ্যে বেরিয়েও যান কুণাল।
এদিকে, এই ঘটনা জানাজানি হতেই বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যেসময় রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে একরকম লোফালুফি খেলছে ইডি, রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমত ভূমিকম্প চলছে, সেই সময় কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কুণালের দেখা হওয়াটা কি একেবারেই স্বাভাবিক?
তৃণমূল-বিজেপি আঁতাত তত্ত্ব : বামেদের পক্ষ থেকে এরপরই ফের তৃণমূল-বিজেপি (TMC) আঁতাত-র তত্ত্ব তুলে ধরা হয়। তবে সিপিএমের (CPIM) এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপিও। পদ্ম শিবির বলছে, যেহেতু একই ফ্ল্যাট, তাই আচমকা দেখা হয়ে যাওয়াটা অস্বাভাবিক বিষয় নয়। কল্যাণ চৌবে বলেন, ‘আমরা তখন সবে খাওয়া শুরু করেছি। তখন ঢুকে পড়েন কুণাল। সেই মুহূর্তে তো আর তাঁকে বেরিয়ে যেতে বলা যায় না। আবার আমরাও খাবার থালা ছেড়ে উঠে যেতে পারি না।’
রহস্য যেখানে : এবার এখানে উঠে আসছে কিছু প্রশ্ন। দুই বিরোধী শিবিরের দেখা হওয়াটা কি নিতান্তই কাকতালীয়, নাকি রয়েছ অন্য কিছুও?
১) ধমেন্দ্র প্রধান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কল্যাণ চৌবে দাপুটে বিজেপি নেতা। তাঁরা দুজন একসাথে উপস্থিত। সেখানে নিরাপত্তা রক্ষীরা থাকবেই। থাকবে তাঁদের দিজনের স্টিকার লাগানো গাড়িও। কুণালবাবু এতটাও বোকা নন যে তিনি বুঝবেন না কে এসেছেন।
২) কুণাল ঘোষ তৃণমূলের মুখপাত্র। তার উপর আবার পেশাগত ভাবে সাংবাদিক। এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্যে আসছেন, কিন্তু কুণালের কাছে খবর থাকবে না সেটা তো হতে পারে না।
তাহলে কি? রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী দুর্নীতির দায়ে রয়েছেন ইডির হেফাজতে। আবার রহস্যজনক ভাবে ওই একই দিনে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে হঠাৎই দেখা হয়ে যায় কুণাল ঘোষের! পার্থর ব্যাপারেই সমঝোতা হতে চলেছে নাকি কুণাল হঠাৎই পদ্মফুলের ভক্ত হয়ে উঠতে পারেন? বিরোধীরা কিন্তু প্রশ্ন তুলছেন।