বাংলাহান্ট ডেস্ক: লাদাখে (Ladakh) ফের অশান্তির আগুন। বুধবার লেহ শহরে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা লেহ অ্যাপেক্স বডি (এলএবি)-র যুব শাখার ডাকে প্রতিবাদ কর্মসূচি চলাকালীন পরিস্থিতি ক্রমশ সহিংস হয়ে ওঠে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৭০ জন। উত্তেজনা প্রশমিত করতে প্রশাসন কার্ফু জারি করেছে।
ষষ্ঠ তফসিলের দাবিতে অশান্ত লাদাখ (Ladakh)
আগামী ৬ অক্টোবর লাদাখ (Ladakh) প্রতিনিধিদলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বৈঠক হওয়ার কথা। তার আগেই বুধবারের বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পেল। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা লেহ-তে বিজেপি কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে এবং পুলিশের একটি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরেই লাদাখে রাজ্যের মর্যাদা পুনর্বহাল এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করার দাবি তোলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:একশো ভারতীয় টাকার দাম পাকিস্তানে কত? অঙ্কটা শুনলে চোখ উঠবে কপালে!
সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুক এই আন্দোলনের অন্যতম মুখ। লাদাখের (Ladakh) বিশেষ সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দাবি করে তিনি ও তাঁর সহযোগীরা গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ৩৫ দিনের অনশনে বসেছেন। তবে আন্দোলন হিংসাত্মক হয়ে ওঠায় ওয়াংচুক ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, লড়াই শান্তিপূর্ণ পথে এগোনো উচিত।
২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর ভেঙে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি হয়— জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ (Ladakh)। জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন শেষে নির্বাচিত সরকার গঠিত হলেও, লাদাখ এখনও পুরোপুরি কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণাধীন। এখানকার যুব সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে আলাদা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুটি লোকসভা আসন এবং ষষ্ঠ তফসিলের অন্তর্ভুক্তির দাবি তুলেছে আন্দোলনকারীরা। ষষ্ঠ তফসিল কার্যকর হলে লাদাখের আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতি ও স্বায়ত্তশাসনের অধিকার সংরক্ষিত হবে বলে তাদের মত।
উত্তর-পূর্ব ভারতের চারটি রাজ্যে বর্তমানে ষষ্ঠ তফসিল কার্যকর রয়েছে। দার্জিলিংকেও একই মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে দীর্ঘ আন্দোলন হয়েছিল, তবে তা বাস্তবায়িত হয়নি। এবার লাদাখের (Ladakh) দাবি ঘিরে ফের জাতীয় আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে ষষ্ঠ তফসিল।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে বড় ঘোষণা কেন্দ্রের, রেল কর্মীদের দেওয়া হবে ৭৮ দিনের বোনাস, কারা কারা পাবেন?
লাদাখ (Ladakh) আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে বৌদ্ধপ্রধান লেহ, তবে মুসলিম অধ্যুষিত কার্গিলও এই দাবির পক্ষে সরব হয়েছে। কার্গিল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স বৃহস্পতিবার বন্ধের ডাক দিয়ে ওয়াংচুকের অনশনকে সমর্থন জানায়। সংগঠনের নেতা সাজ্জাদ কার্গিলি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “এটা লাদাখের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই।”
বর্তমানে লাদাখ (Ladakh) জুড়ে নিরাপত্তা কড়া করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় বৈঠকের আগে এই সহিংসতা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।