বাংলা হান্ট ডেস্ক : একের পর এক ইসলামিক রাষ্ট্রে (Islamic State) নারীশিক্ষার উপর নেমে আসছে নিষেধাজ্ঞা। এবার আর তালিবান শাসিত আফিগানিস্তানে নয়, বরং, নারীশিক্ষা রুখতে এবার ছাত্রীদের বিষ খাওনোর অভিযোগ উঠল ইরানে (Iran)। সম্প্রতি সেদেশের একাধিক শহরে বিভিন্ন স্কুলে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে প্রায় শ’খানেক ছাত্রী। অভিযোগ ওঠে তাদের বিষ খায়ানো হয়েছে। এই খবর প্রকাশ্যে আনেন ইরানের উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, নারীশিক্ষার বিরোধীরাই এমন জঘন্য কাজ করেছে। এই ঘটনায় পথে নেমে বিক্ষোভও দেখান অভিভাবকরা।
এই ঘটনা হঠাৎ একদিনে ঘটেনি। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসের শেষ থেকেই স্কুলে ছাত্রীদের বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ উঠতে শুরু করে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ দক্ষিণ তেহরানের কওম শহর থেকে পাওয়া যায়। সেখানে সেখানে প্রায় শ’খানেক ছাত্রী স্কুলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়। পরে জানা যায় তার মূল কারণ ছিল বিষক্রিয়াই। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালেও ভরতি করতে হয়। রবিবার ইরানের উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউনুস পানাহি স্বীকার করে নেন, ষড়যন্ত্র করেই বিষ খাওয়ানো হয়েছে ওই ছাত্রীদের।
পানাহি আরও বলেন, ‘কওম শহরে ছাত্রীদের বিষক্রিয়ার ঘটনায় একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে। কিছু মানুষ চান স্কুল বন্ধ হয়ে যাক। বিশেষ করে ছাত্রীদের স্কুল।’ তবে এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিনা তা স্পষ্ট করে জানাননি ইরানের মন্ত্রী।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এই ঘটনায় শহরের প্রশানিক ভবনের সামনে প্রবল বিক্ষোভে সামিল হন ওই ছাত্রীদের অভিভাবকরা। তাঁরা এই বিষয়ে সরকারের জবাবদিহি চান। পরদিন সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তবে সেই শাস্তি আদৌও হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই হিজাব বিতর্কে টলমল হয়ে যায় ইরান। হিজাব না পরার কারণে পুলিসি হেফাজতে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই হিজাব বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদ জানিয়ে পথে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ইরানের সাধারণ মানুষ। প্রতিবাদে সরব হন সেদেশের বিখ্যাত ব্যক্তিত্বরাও। প্রতিবাদ আন্দোলনকে স্তব্ধ করতে কঠোর দমননীতি গ্রহণ করে খোমেইনি সরকার। শুধুমাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণেই প্রতিবাদীদের মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হয়। এরপর, নারীশিক্ষা স্তব্ধ করতে ছাত্রীদের বিষ প্রয়োগের ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিশ্বজুড়ে।