বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার ভোর পর্যন্ত মুষলধারে বৃষ্টিতে এক হাঁটু জলের তলায় ডুবে গেল কলেজ স্ট্রিট (College Street)। জলের তোড়ে ভেসে গেল লক্ষ, লক্ষ বই। নষ্ট হয়েছে পুজোবার্ষিকী, কমিক্স, উপন্যাস, গল্প সমগ্র। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, সত্যজিৎ রায়, আশাপূর্ণা দেবীর কালজয়ী বইগুলো ভাসতে দেখা গেল কলার ভেলার মতো।
কলেজ স্ট্রিটে (College Street) বড় থেকে ছোট প্রকাশকের ক্ষতি
দীপ প্রকাশনী, দে’জ পাবলিশিং, পত্রভারতীর মতো বড় প্রকাশকদের পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়েছে ধ্যানবিন্দু, বুকফার্মের মতো ছোট-মাঝারি প্রকাশকরাও। শুধু বই নয়, জলে ডুবে বিকল হয়ে গিয়েছে একাধিক ছাপাখানার যন্ত্রও। প্রকাশকদের কথায়, “এই ক্ষতি এড়াতে মা দুর্গাই ভরসা!”
ধ্যানবিন্দু প্রকাশনার অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রায় ৬০ হাজার টাকার লিটল ম্যাগাজিন জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মৌলালির ছাপাখানায় মজুত বইও ভেসে গেছে জলের তোড়ে। সাইকেল চালিয়ে বরানগর থেকে কলেজ স্ট্রিটে (College Street) এসে তিনি দেখেন, দোকান জলের তলায় ডুবে আছে, বই ভিজে এমন অবস্থায় বিক্রি করাও অসম্ভব।
দীপ প্রকাশনের দীপ্তাংশু মণ্ডলের ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিন লক্ষ টাকা। তাঁর কথায়, “পুজোর মুখে নতুন বের হওয়া দুটি বই মহাস্থবির জাতক এবং আলো আঁধারির গোপাল পাঁঠা হটকেকের মতো বিক্রি হচ্ছিল। কিন্তু জলেই দফারফা। বইয়ের পাতা ভিজে ফুলে গিয়েছে, ছিঁড়ে গিয়েছে।”
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়ের জানিয়েছেন, “কমবেশি সকলেরই ক্ষতি হয়েছে। বিশেষত পত্রভারতীর বিপুল ক্ষতি হয়েছে। ইনসিওরেন্স ক্লেম করা হয়েছে।” এদিন তিনি মনে করান, আমফানের সময়ও একইভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন প্রকাশকরা। সেই সময় ছোট প্রকাশকদের পাশে দাঁড়িয়েছিল গিল্ড।
আরও পড়ুনঃ প্লাস্টিক-আবর্জনায় বন্ধ নালা, শহরবাসীকে ‘সিভিক সেন্স’ নিয়ে প্রশ্ন মমতার
কিন্তু ত্রিদিবের মতে, বইপাড়ার কাঠামোগত সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। তিনি বলেন, “ছোট বিক্রেতাদের সিংহভাগের আধারকার্ড নেই, নিজের নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। পরিকল্পনাহীনভাবে চলছে বইপাড়া (College Street)। এই রীতি দ্রুত বদলানো দরকার।”