বাংলাহান্ট ডেস্ক : দেশজুড়ে আলোর উৎসব দিওয়ালি উদযাপিত হলেও কালীপুজোর (Kalipujo 2025) আনন্দে মাতোয়ারা বাংলা। শুধু শহর কলকাতা নয়, বিভিন্ন জেলায় জেলায় সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে মা কালীর পুজো। বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে একাধিক সতীপীঠ। এছাড়াও এমন কিছু পুজোও রয়েছে যা হয়ে আসছে বছরের পর বছর ধরে। এমনই এক সুপ্রাচীন পুজো (Kalipujo 2025) হল মুর্শিদাবাদের লালগোলার রাজাদের কালীবাড়ির পুজো।
লালগোলার রাজবাড়িতে পূজিতা হন মা কালী (Kalipujo 2025)
মুর্শিদাবাদ জেলার সম্পদ লালগোলা রাজবাড়ি। সুপ্রাচীন এই রাজবাড়িতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী (Kalipujo 2025)। ঠিক কত বছরের পুরোনো এই পুজো? পুরোহিত জানান, এই পুজো কবে শুরু হয়েছিল তা সঠিক ভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে শোনা যায়, এই পুজো আনুমানিক সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো। এখানে পা পড়েছে বাংলার বহু স্বনামধন্য মনীষীদের।
আসতেন বাংলার মনীষীরা: কথিত আছে, এই লালগোলা রাজবাড়ির এই কালীবাড়িতে (Kalipujo 2025) আসতেন সাহিত্যসম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে সাহিত্যিক রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর মতো ব্যক্তিরা। শোনা যায়, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর সৃষ্টি ‘আনন্দমঠ’ও লেখা হয়েছিল এখানেই। শুধু তাই নয়, এই কালীমূর্তি দেখেই নাকি ‘বন্দেমাতরম’ রচনা করেছিলেন সাহিত্যসম্রাট।
আরও পড়ুন : বারাণসী-অযোধ্যার মতো ৪ টি আধ্যাত্মিক শহর ঘোরার সুযোগ, আকর্ষণীয় প্যাকেজ আনল IRCTC, খরচ কত পড়বে?
কীভাবে শুরু হয় পুজো: ইতিহাসবিদদের কথায়, লালগোলার রাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায়ের সঙ্গে নাকি বঙ্কিমচন্দ্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। পাশাপাশি এই রাজবাড়ির কালীমন্দিরের সঙ্গে নাকি বিদ্রোহী কবিরও সম্পর্ক ছিল বলে কথিত আছে। শোনা যায়, স্বপ্নাদেশ পেয়ে কালীপুজোর (Kalipujo 2025) শুরু করেছিলেন রাজা রাও রাম শঙ্কর রায়। কথিত আছে, তিনি একবার স্বপ্নাদেশ পান, লালগোলার কলকলির চরে দেবী রাজরাজেশ্বরী রয়েছেন। সেখান থেকে রাজবাড়িতে এনে প্রতিষ্ঠা করতে হবে মাকে। তারপরেই রাজবাড়ির সামনে পাকা দালানবাড়ি তৈরি করা হয়। সেখানে প্রতিষ্ঠা করা হয় মাকে।
আরও পড়ুন : দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার, বাবা আর সৎমা মিলেই খুন করেছেন মেয়েকে! আলিপুরে নাবালিকা মৃত্যুতে চাঞ্চল্য
অন্যান্য বিগ্রহের থেকে এখানের মা কালীর বিগ্রহও অনেকটাই আলাদা। এখানে মা কালীর (Kalipujo 2025) মূর্তির পাশে রয়েছে লক্ষ্মী আর সরস্বতী। মা কালীর এক হাতে খড়গ, অন্য হাতে আশীর্বাদের মুদ্রা। বাকি দুই হাত হাততালি দেওয়ার ভঙ্গিমায় রয়েছে। আগে নাকি মালদহের কোনও এক জায়গায় পূজিতা হতেন মা কালী। সেখান থেকে পদ্মার জলে ভেসে কোনোভাবে চলে আসেন চরে। মা কালীর জন্য হয় অন্ন ভোগ। এছাড়াও পুরনো রীতি মেনে ইলিশ মাছের ভোগও দেওয়া হয় মাকে।