বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাবা ছিলেন শ্মশানের ডোম। তার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরতে সেই ডোমের কাজেই নিজেকে নিযুক্ত করেছেন টুম্পা। বারুইপুরের পুরন্দরপুর মহাশ্মশানের ডোম টুম্পা সৃষ্টি করছেন এক অনন্য ইতিহাসের।
ডোমের কাজ সাধারণত পুরুষরাই করে আসছেন বছরের পর বছর ধরে। কিন্তু বারুইপুরের টুম্পা নিজের হাতে সেই কাজ করছেন। শুধু কাজ করা নয়, মৃতদেহের নাম নথিভুক্ত করানো থেকে চুল্লীর কাজ, এছাড়াও মৃতদেহ সৎকারের সমস্ত কাজই একা হাতে দক্ষতার সাথে সামলাচ্ছেন টুম্পা। কোনরকম ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিদিন ১৪ ঘন্টা নিজের দায়িত্ব যত্ন সহকারে পালন করে আসছেন এই যুবতী।
টুম্পা দাসের বাড়ি বারুইপুরের কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের পুরন্দরপুর জোড়া মন্দিরের কাছে। তার বাবা বাপি দাস কয়েক বছর আগে হঠাৎ করে মারা যান। তিনিও পুরন্দরপুর মহাশ্মশানের ডোমের দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। বাড়িতে মা ও ছোট বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে মাধ্যমিক পাস করার পর বাবার ডোমের কাজই নিজের হাতে তুলে নেন টুম্পা দাস। ভয়-ভীতির তোয়াক্কা না করে গত সাত বছর ধরে শ্মশানের দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি ।
পুরন্দরপুর শ্মশানে ২০১৯ সাল থেকে চালু হয় বৈদ্যুতিক চুল্লি। তার আগে এই শ্মশানে কাঠের চুল্লির সাহায্যে মৃতদেহ সৎকার করা হতো। সেই সময়ও টুম্পা সমস্ত কাজ করতেন একা হাতে। পুরন্দরপুর শ্মশানে গেলে টুম্পা দাসকে দেখা যায় একহাতে কাঠ ও অন্য হাতে গ্লাভস পড়ে সৎকারের ব্যবস্থা করতে। টুম্পা জানিয়েছেন,”মৃতদেহ এলে সেই নথিভুক্তকরণ থেকে সৎকারের যাবতীয় কাজ আমাকেই করতে হয়। সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ১৪ ঘণ্টার ডিউটি।”
একজন মেয়ে হয়ে ডোমের কাজ করতে ভয় লাগে না? টুম্পার সাহসী উত্তর,”প্রথম প্রথম একটু ভয় করত। সৎকারের কাজ করার সময় দেহ মাঝে মাঝে অবশ হয়ে যেত। কিন্তু এখন সেইসব কাটিয়ে উঠেছি। শ্মশান যাত্রীদের ভালোবাসায় নতুন করে লড়াইয়ের সাহস পাই।”
তবে টুম্পার আক্ষেপ, এই অগ্নি মূল্যের যুগেও কল্যানপুর পঞ্চায়েত থেকে তাকে মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয়। যা দিয়ে সংসার চালাতে বেশ কষ্টই হয় তার।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা