বাংলাহান্ট ডেস্ক : একজনের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা ঢুকছে অন্য আর একজনের অ্যাকাউন্টে। এহেন অভিযোগেই এবার শোরগোল ছড়ালো জলপাইগুড়ির পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে। বারবার পঞ্চায়েতের কাছে অভিযোগ জানিয়েও ফল মেলেনি কিছুই। শেষমেষ সুবিচারের আশায় সংবাদমাধ্যমের দ্বারস্থ হলেন বিশেষভাবে সক্ষম দম্পতি।
জলপাইগুড়ি জেলার পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা জয়ন্তী দেবনাথের অভিযোগ, দুয়ারে সরকার প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তারপর দীর্ঘদিন কাটলেও কোনও টাকাই ঢোকেনি তাঁর অ্যাকাউন্টে। বারবার মোবাইলে মেয়েকে দিয়ে চেক করাতেন টাকা ঢোকার মেসেজ এসেছে কি না, কিন্তু বাকি সবার টাকা ঢুকলেও তাঁর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে মা ভবানীই রয়ে গেছেন বরাবর।
শেষমেষ বিডিও অফিসে খবর নেন ওই মহিলা। তারপর জানা যায় যে অন্য কারও অ্যাকাউন্টে ঢুকছে তাঁর লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা। এর পর বেশ কয়েকবার পঞ্চায়েতে গেলেও প্রতিবারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। মহিলা জানিয়েছেন, ‘আমি বিডিও অফিসে গেলে জানতে পারি আমার টাকা অন্যের অ্যাকাউন্টে ঢুকছে। আমার গ্রামীণ ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট। অথচ যিনি টাকা পাচ্ছেন তার স্টেট ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমার সন্দেহ এর মধ্যে বড় কোনও দুর্নীতি রয়েছে। আমি নিজেও তৃণমূল করি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের জন্য এত কিছু করছেন কিন্তু মাঝখানে পঞ্চায়েত আর কিছু মানুষের জন্য সব বৃথা যাচ্ছে।’
জয়ন্তী দেবনাথ এবং তাঁর স্বামী বুলু দেবনাথ দুজনেই বিশেষভাবে সক্ষম। বাসে বাসে বাদাম বিক্রি করেন বুলু। তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রীর কাছ থেকে কাগজ নিয়ে পঞ্চায়েত কাগজ আটকে রেখেছিল। এখন দেখতে পাচ্ছি ওরা নিজেদের লোকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দিয়ে দিয়েছে। আমাদের গ্রামে শুধু আমরাই নই আরও অনেকেই এই দুর্নীতির শিকার হয়েছে। তাই তারাও টাকা পাচ্ছেন না। আমরা দীর্ঘদিনের তৃণমূল কর্মী। এই পঞ্চায়েতকে জেতানোর জন্য প্রচুর খেটেছি। এখন জেতার পর আমাদের সঙ্গেই এরা প্রতারণা করছে।’
যদিও সমস্ত অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান বেনুরঞ্জন সরকার। তাঁর দাবি, মাথার গোলমাল রয়েছে ওই দম্পতির। তিনি জানিয়েছেন, ‘ কী হয়েছে তা তদন্ত না করে বলতে পারব না। তবে যিনি অভিযোগ করেছেন তাঁর মানসিক বিকৃতি আছে। সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা পান কিন্তু বলেন কিছুই পাননি।’ সব মিলিয়ে ব্যাপক শোরগোল ছড়িয়েছে এলাকায়।