বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল মহারাষ্ট্রের মালেগাঁওয়ে। সেখানে এক কৃষকের পরিবার তাঁদের বাড়িতে এক সপ্তাহ ধরে একটি চিতাবাঘের শাবককে রেখেছিলেন। পরবর্তীকালে বন দফতরের আধিকারিকদের এই তথ্য জানানো হলে তাঁরা সেখানে এসে সেই শাবকটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান। জানা গিয়েছে যে, চিতাবাঘের শাবকটিকে বিড়ালছানা ভেবে ক্ষেতের কাছ থেকে বাড়িতে নিয়ে আসে এক শিশু।
এমনকি, সেই শাবকটির সাথে বেশ কিছুদিন যাবৎ খেলতেও থাকে ওই শিশুটি। এমতাবস্থায়, বন দফতরের দল সেখানে পৌঁছলে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, বিড়ালছানা ভেবে চিতাবাঘের শাবককে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে।
জানা গিয়েছে যে, সপ্তাহ খানেক আগে সাহেবরাও গঙ্গারাম ঠাকরের মরজার এলাকার বাড়ির পাশের ক্ষেতে শিশুরা বিড়ালছানার মতো দেখতে একটি ছোট প্রাণী দেখতে পায়। এমনকি, শিশুরা তার সাথে খেলতেও শুরু করে। এরপরেই সেটিকে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে। খবর পেয়ে বনবিভাগের কর্মীরা ওই কৃষকের বাড়িতে গিয়ে শাবকটিকে উদ্ধার করেন। এমতাবস্থায়, যখন ওই কৃষকের পরিবার জানতে পারেন যে এটি একটি চিতাবাঘের শাবক, তখন রীতিমত আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা।
এই প্রসঙ্গে সাহেবরাও ঠাকরে জানিয়েছেন, “আমার বাড়ির কাছে ৫০ ফুটের মধ্যে একটা আখের ক্ষেত আছে। তাই কাছাকাছি কিছু গাছও রয়েছে। সেখানে শিশুরা বিড়ালছানার মতো একটি প্রাণীকে দেখতে পায়। যদিও, আমার সেটিকে চিতাবাঘের শাবকের মতই মনে হয়েছিল। এরপর সবাইকে বাড়িতেও থাকতে বলি। ওই শাবকটির মা কখন এসে আক্রমণ করবে তা নিয়ে ভয়ে ছিলাম। এরপর শাবকটিকে বাড়ির বাইরে রাখা হয়। পাশাপাশি, জানালা দিয়ে বাইরে লক্ষ্য রাখলেও শাবকটির মা আসেনি।”
তিনি আরও জানান, “শাবকটি ক্ষেতের দিকে যেত এবং আবার বাড়ির দিকে ফিরে আসত। এভাবেই ২-৩ দিন কেটে গেল। বাচ্চারা যখন খেলতো, তখন সেটি বাচ্চাগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকত। এমনকি, শাবকটিও খেলত তাদের সাথে। পরিবারের সদস্যরা তাকে দুধ এবং রুটি খাওয়াতেন। সে বাড়িতেই ঘুরে বেড়াত। এর পরই প্রশ্ন উঠল এটা বিড়াল নাকি চিতাবাঘের শাবক?”
তিনি আরও বলেন যে, ওই শাবকটি খেলার ছলে তাঁর ২ বছরের নাতনিকে বেশ কয়েকবার কামড়েও দেয়। এভাবেই ৬-৭ দিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার পর খবর দেওয়া হয় বন বিভাগকে। এরপর বন বিভাগের দল এসে শাবকটিকে নিয়ে যায়। তবে তিনি ওই চিতাবাঘের শাবকটিকে দৈনিক দেড় লিটার দুধ খাওয়াতেন। পাশাপাশি, তিনি এটাও লক্ষ্য রাখতেন যে, তার মা আদৌ তাকে খুঁজছে কিনা।
এই প্রসঙ্গে বন দফতরের মালেগাঁও রেঞ্জের আধিকারিক বৈভব হিরে জানিয়েছেন, “এটি একটি পুরুষ শাবক এবং এর বয়স মাত্র দু’মাস। মূলত, ওই বাড়িটিতে বাচ্চারা ছিল এবং তাঁরা সকলেই শাবকটিকে দুধও খাইয়েছিল। তাই শাবকটি সেখান থেকে চলে যায়নি। বাচ্চা মেয়েটির সাথে খেলত সে। যদিও, বন্যপ্রাণী আইন অনুসারে কিছু বিধিনিষেধ রয়েছে, তাই আমরা শাবকটিকে হেফাজতে নিয়েছি। আপাতত, ভেটেরিনারি চিকিৎসক দ্বারা তার দেখাশোনা করা হচ্ছে।”