বাংলাহান্ট ডেস্ক : বর্তমান যুগ টেকনোলজির। এই টেকনোলজি শব্দটা বললেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে মোবাইল ফোন কিংবা ল্যাপটপ। আর এই বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলির হৃৎপিণ্ড হল তাদের ব্যাটারি। লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি এই বৈদ্যুতিক যন্ত্র গুলিতে প্রাণ সৃষ্টি করেছে। ৩ বিজ্ঞানীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আবিষ্কার হয়েছিল লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি।
ব্যানিস্টার গুডএনাফ তাঁদেরই একজন। ১০১ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন তিনি। আগামী জুলাই মাসে ছিল তার ১০১ তম জন্মদিন। ঠিক এক মাস আগে ২৫ শে জুন শেষ ত্যাগ করলেন তিনি। আমেরিকার টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে টেক্সাসের অস্টিনে এক বৃদ্ধাশ্রমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন নোবেল জয়ী এই বিজ্ঞানী। প্রয়াত এই আমেরিকান বিজ্ঞানীর একটি রেকর্ডও রয়েছে।
এই বিজ্ঞানী ৯৭ বছর বয়সে সব থেকে বেশি বয়সী হিসাবে পেয়েছেন নোবেল। পুরস্কার পাওয়ার পর রসিকতার সুরে গুডএনাফ জানিয়েছিলেন, “বেঁচে থাকুন ৯৭ বছর পর্যন্ত। আপনিও অনেক কিছু করতে পারবেন।” এই বিজ্ঞানী ৯০ বছর বয়স পার করেও অধ্যাপনা করতেন। লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি তৈরি এবং তার গঠনে প্রযুক্তিগত উন্নতির ক্ষেত্রে গুডএনাফ ছিলেন অন্যতম এক পথিকৃৎ।
৭০ বছরের দাম্পত্য জীবনের পর ২০১৬ সালে তাঁর স্ত্রী আইরিন ওয়াইজ়ম্যানের প্রয়াত হন। এই বিজ্ঞানীর ছিল না কোনও সন্তান। বিজ্ঞানী গুডএনাফের গবেষণা আমূল পরিবর্তন এনেছিল প্রযুক্তি ক্ষেত্রে। স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, বৈদ্যুতিন গাড়ি, পেসমেকার— তারহীন ‘পোর্টেবল রিচার্জ’-এর ক্ষেত্রে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির গঠন তাঁরই হাত ধরে।
এই ব্যাটারি আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানী বলেছিলেন, “আমরা ভেবেছিলাম এই ব্যাটারি বেশ কাজের হবে। কিন্তু এভাবেই দুনিয়ার প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাবে তা কল্পনা করতে পারিনি।” এই ব্যাটারি তৈরির ক্ষেত্রে গুডএনাফের পাশাপাশি আরো দুই বিজ্ঞানীর অবদান রয়েছে। তাঁরা হলেন আমেরিকার এম স্ট্যানসি হুইটিংহ্যাম এবং জাপানের আকিরা ইয়োশিনো।
৭০ এর দশকে লিথিয়াম ধাতুর সাহায্যে দুই ভোল্টের শক্তির ব্যাটারি তৈরি করেন হুইটিংহ্যাম। গুডএনাফ আশির দশকে সেই ব্যাটারি নিয়ে আরো গবেষণা শুরু করেন। এরপর আরো শক্তিশালী লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির আবিষ্কার করেন তাঁরা। গোটা জীবন বিভিন্ন ধরনের গবেষণা ও লেখালেখিতে ব্যস্ত ছিলেন গুডএনাফ।