বাংলাহান্ট ডেস্ক : আগামী ১২ এপ্রিল দুই কেন্দ্রে উপনির্বাচন বঙ্গে। আর তা ঘিরেই স্বভাবতই ব্যস্ততা তুঙ্গে সব শিবিরেরই। তোলপাড় রাজ্য রাজনীতিও। কিন্তু উত্তরাখণ্ডের ভোটের দায়িত্ব পেলেও বাংলার উপনির্বাচনে ব্রাত্য লকেট চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির তারকা প্রচারকদের তালিকায় রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে ভিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বাদ পড়েননি কেউই। কিন্তু বাংলার নেত্রী হওয়া সত্ত্বেও সেই তালিকায় নাম নেই লকেটের। বঙ্গ রাজনীতিতে দাপুটে বিজেপি নেত্রী বলেই পরিচিত অভিনেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাহলে কেন বাদ পড়ল তাঁর নাম? এই নিয়েই তুঙ্গে ছিল জল্পনা।
এদিন সকালে অবশ্য বিজেপি নেত্রী জানিয়েছিলেন যে,’কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমাকে যোগ্য মনে করেছিল, তাই উত্তরাখণ্ডের ভোটের দায়িত্ব দিয়েছিল। আর বাংলার বিজেপি হয়তো আমাকে যোগ্য বলে মনে করছে না। তাই প্রচারকের তালিকায় রাখেনি। দল যাঁকে যোগ্য বলে মনে করেছে, তাঁকেই প্রচারকের দায়িত্ব দিয়েছে। ‘ কিন্তু বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই বদলে গেল বয়ান। এবার কার্যতই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ এবং অভিমানে ফেটে পড়লেন তিনি।
লকেট চট্টোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, এই বিষয়ে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এবং রাজ্য সহ সভাপতি অর্জুন সিং-এর সঙ্গে কথা হয়েছিল তাঁর। তিনি তাঁদের জানিয়েছিলেন যে সংসদে অধিবেশন চললেও ছুটির দিনে দিল্লি থেকে আসানসোল এবং কলকাতায় গিয়ে প্রচার সারবেন তিনি। কিন্তু তাঁকে সুযোগই দেয়নি দল। ফলে আপাতত তাঁর বক্তব্য, ‘তালিকায় আমার নাম নেই মানে দল আমাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনেই করছে না। তাই ইচ্ছা থাকলেও প্রচারে অংশ নেব না আমি।’
বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। আর এবার দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচনেই মহিলা প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে লড়ছেন অগ্নিমিত্রা পাল, অন্যদিকে বালিগঞ্জে প্রার্থী হয়েছেন বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র কেয়া ঘোষ। দুই প্রার্থীই পূর্বে মহিলা মোর্চার নেত্রী ছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রচারে রাখা হয়নি লকেটকে।
তাই নিয়েই ক্ষোভ উগরেছেন বিজেপি নেত্রী, তিনি বলেন, ‘আমাদের দলে ইচ্ছা মতো কিছু করা যায় না। সব কিছুতেই দলীয় নির্দেশ মান্য করতে হয়। আমার নাম তালিকায় নেই মানে, নেতৃত্বের কোনও নির্দেশ নেই। তাই আমি নিজের থেকে প্রচারে নামতে পারি না। তবে আমার খুবই ইচ্ছা ছিল। যাই হোক, নেতৃত্ব যখন আমায় গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন না তখন আর প্রচারে অংশ নিচ্ছি না।’
স্বভাবতই, উল্টোসুরে গাইছেন অর্জুন সিংও। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার কাজ ছিল প্রচারের জন্য সকলকে বলা। সেই কাজটা আমি করেছি। এর পরে কার নাম তালিকায় আছে বা নেই, সেটা আমার এক্তিয়ারে নয়। আর কেউ যদি প্রচারে না নামতে চান, তাতেও আমার কিছু বলার নেই।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অনেকেরই দাবি, পুরভোটে বিজেপির ভরাডুবি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বিজেপি নেত্রী। তারপর তাঁকে দেখা গিয়েছিল বিদ্রোহী শিবিরেও। সেখানে দলের একাধিক বিদ্রোহী নেতার সঙ্গে বৈঠক সারেন তিনি। তাঁর বৈঠকের পরই তৃণমূলে যোগ দেন বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। এমনকি এই জল্পনাও ছড়িয়েছিল যে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। আর সেই সবের জেরেই বাংলার উপনির্বাচন থেকে তাঁকে দূরে রেখেছে দল। তবে এর ফলে যে বিজেপির সঙ্গে বেশ কিছুটা বাড়ল লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দূরত্ব এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ।
তৃণমূলের গৃহযুদ্ধ! কল্যাণের ‘মাথায় কার হাত!’ মন্তব্যের পাল্টা দিলেন তৃণাঙ্কুর