বাংলা হান্ট ডেস্ক: চলতি বছরে বিশ্বকর্মা পুজো (Vishwakarma Puja) ১৭ সেপ্টেম্বরের পাশাপাশি ১৮ সেপ্টেম্বরও পালিত হচ্ছে। বিশ্বকর্মাকে মহাবিশ্বের স্রষ্টা ভগবান ব্রহ্মার সপ্তম পুত্র বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি, ভগবান বিশ্বকর্মা হলেন সৃষ্টির দেবতা। বিশ্বাস করা হয় যে, সমগ্র বিশ্বে জীবনের কার্যকারিতার জন্য যা কিছু সৃষ্টি রয়েছে তা সবই ভগবান বিশ্বকর্মার দান। এমতাবস্থায়, তাঁকেই বিশ্বের প্রথম কারিগর, স্থপতি বা ইঞ্জিনিয়ার বললে ভুল হবে না।
এদিকে, প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী মনে করা হয় যে, ভারতে এমন একটি মন্দির রয়েছে যা বিশ্বকর্মা নিজেই তৈরি করেছিলেন। এই মন্দিরের অভূতপূর্ব স্থাপত্য, কারুকার্য এবং শিল্পসত্ত্বাকে প্রত্যক্ষ করতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক ভগবান বিশ্বকর্মার তৈরি ওই মন্দিরের অতুলনীয় সৌন্দর্য এবং সেখানে বিরাজমান দেবতা সম্পর্কে।
এই মন্দিরটি রয়েছে বিহারে: উল্লেখ্য যে, বিহার রাজ্যের ঔরঙ্গাবাদ জেলায় এই প্রাচীন এবং সুবিশাল মন্দিরটি রয়েছে। যেটি স্বয়ং ভগবান বিশ্বকর্মা এক রাতেই নিজের হাতে তৈরি করেছিলেন বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি, ভগবান সূর্য এখানে বিরাজমান রয়েছেন। ঔরঙ্গাবাদের এই অনন্য সূর্য মন্দিরটি একাধিক কারণে সবাইকে আকৃষ্ট করে।
আরও পড়ুন: গণেশ চতুর্থীর দিনই ঘুরে যাবে ভাগ্য! শুভ সময়ের কেরামতিতে মালামাল হবে এই ৫ রাশি
এই সূর্য মন্দিরের বিশেষত্ব: এটি হল দেশের একমাত্র সূর্য মন্দির, যার দরজা পশ্চিম দিকে খোলে। এছাড়াও, দেশের সব সূর্য মন্দির পূর্বমুখী হলেও ঔরঙ্গাবাদের সূর্য মন্দির পশ্চিম দিকে মুখ করে রয়েছে। মন্দিরে সূর্য দেবতার মূর্তি সাতটি রথে চেপে রয়েছেন। যেখানে তাঁর তিনটি রূপ বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমটি হল উদয়াচল-সকালের সূর্য, দ্বিতীয়টি হল মধ্যচল- মধ্য সূর্য এবং তৃতীয়টি হল অস্তাচল অর্থাৎ অস্তগামী সূর্য।
আরও পড়ুন: ঋণ নিয়ে কোম্পানি খুলে ২৫ বছরেই ছুঁয়ে ফেলেন আকাশ! এখন ভারতের দশম ধনী ব্যক্তি ইনি
মন্দিরটি প্রায় ১০০ ফুট উঁচু। যেখানে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের এক অপূর্ব নিদর্শন দেখা যায়। মন্দিরটি আয়তাকার, বর্গাকার, বৃত্তাকার, ত্রিকোণাকার বিভিন্ন আকারে কাটা পাথরগুলিকে যুক্ত করে সিমেন্ট বা চুন-মশলা ছাড়াই তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি, মন্দিরটি কালো এবং বাদামী পাথর দিয়ে তৈরি। ঔরঙ্গাবাদের সূর্য মন্দিরের ওড়িশায় অবস্থিত কোনারক সূর্য মন্দিরের সাথে অনেকটাই সাদৃশ্য রয়েছে। মন্দিরের বাইরের শিলালিপিতে ব্রাহ্মী লিপিতে একটি শ্লোক লেখা আছে। যেটি অনুসারে জানা যায়, এই মন্দিরটি ত্রেতাযুগে ১২ লক্ষ ১৬ বছর আগে নির্মিত হয়েছিল।
কিভাবে ঔরঙ্গাবাদের সূর্য মন্দিরে পৌঁছবেন: বিহারের ঔরঙ্গাবাদ জেলায় অবস্থিত এই মন্দিরে যাওয়া অত্যন্ত সহজ। মন্দিরটি ঔরঙ্গাবাদ থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রয়েছে। আপনি যদি আকাশপথে যেতে চান সেক্ষেত্র ঔরঙ্গাবাদ থেকে নিকটতম বিমানবন্দর হল পাটনা। যেখান থেকে মন্দিরটি রয়েছে ১৮০ কিলোমিটার দূরে। রেলপথে নিকটতম রেলওয়ে স্টেশন হল ঔরঙ্গাবাদ। যেখান থেকে মন্দিরটি মাত্র কয়েক কিমি দূরে রয়েছে। পাশাপাশি, আপনি বাস বা ট্যাক্সিতে সহজেই মন্দিরে পৌঁছতে পারেন। এটির নিকটবর্তী পর্যটন স্থলের মধ্যে দেবকুন্ড, উমগা এবং পিরু রয়েছে। এর মধ্যে দেবকুন্ডে ভগবান শিবের একটি প্রাচীন মন্দির রয়েছে।