বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যে রীতিমতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করেছে করোনা। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন প্রায় কুড়ি হাজার মানুষ। কোভিড যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন ১২৯ জন নাগরিক। একদিকে যেমন অর্থনীতি তথা মানুষের জীবনে রীতিমতো সুনামির মতো আছে পড়েছে করোনা। অন্যদিকে তেমনি সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে। গতবছর লকডাউনের পর থেকে তেমনভাবে এখনো শুরু হয়নি স্কুল। প্রায় ৯ মাস বন্ধ থাকার পর মাঝে কিছুদিনের জন্য নবম,দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্কুল শুরু হলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে ফের একবার ঘরবন্দি ছাত্র-ছাত্রীরা। এরইমধ্যে কথা ছিল ১ জুন থেকে শুরু হবে মাধ্যমিক পরীক্ষা। কিন্তু আপাতত তা যে সম্ভব নয় তা পরিষ্কার জানিয়ে দিল রাজ্য। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার আগেই বড় বাধা এখন ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে।
এমনিতেই করোনার কারণে প্রিপারেশন নিয়ে যথেষ্ট সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাদের। অনলাইন ক্লাসের ব্যাবস্থা করতে পারেননি অনেক অভিভাবককই। সে ক্ষেত্রে শুধু পড়াশোনার ক্ষতি নয় মানসিক চাপে আত্মহত্যার পথও বেছে নিয়েছে অনেকেই। ফের একবার প্রবলভাবে ধাক্কা খেলো ছাত্র-ছাত্রীদের এগিয়ে চলার পথ। ১ জুন থেকে শুরু হওয়া মাধ্যমিক শেষ হবার কথা ছিল ১০ জুন, কিন্তু আপাতত এই বিষয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অপেক্ষা করে রয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তের। যদিও এই মুহূর্তে পরীক্ষা আয়োজন করা প্রায় অসম্ভব বলেই জানিয়েছে তারা। প্রথমত, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ রুখতে ফের একবার বন্ধ করা হয়েছে ট্রেন। এমতাবস্থায় যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় অচল হবার শামিল। শিক্ষার্থীদের এক্সাম সেন্টারে পৌঁছানো এই পরিস্থিতিতে প্রায় অসম্ভব বললেই চলে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, জুন মাস অবধি বন্ধ রাখা হবে স্কুল। এর আগেই দেশের ক্রমবর্ধমান করোনার কথা মাথায় রেখে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা বাতিল করে দিয়েছে আইসিএসই। প্রথমে ঐচ্ছিক বলে ঘোষণা করলেও পরে ফের একবার সিদ্ধান্ত বদল করেছে তারা। অন্যদিকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে। যদিও এই পরিস্থিতিতে তা কী করে সম্ভব তা নিয়েই এখন চিন্তায় সকলে। অন্যদিকে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ক্ষেত্রেও এই মুহূর্তে পরিস্থিতি ভীষণই জটিল। কারন রাজ্যে প্রতিবছরই মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রায় দশ লক্ষেরও বেশি ছাত্র-ছাত্রী। এমতাবস্থায় এত বিশাল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পরীক্ষা আয়োজন করতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যা তৈরি হতে পারে তাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্ষেত্রে। যা কখনোই কাম্য নয়।