বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সংসদে প্রশ্ন তোলার বদলে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরেই আইনি জটিলতায় জড়িয়ে রয়েছেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। অভিযোগ ওঠার পর তদন্ত শুরু করে সিবিআই, আর সেই তদন্তকে ঘিরেই একের পর এক আইনি পদক্ষেপ নেয় লোকপাল আদালত। চার্জশিট জমা দেওয়ার অনুমতি দেওয়া থেকে শুরু করে মামলার পরবর্তী ধাপ, সব মিলিয়ে বিষয়টি ক্রমেই রাজনৈতিক ও আইনি বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসে। এই পরিস্থিতিতে লোকপালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মহুয়া। অবশেষে সেই মামলাতেই শুক্রবার গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট, যা সাময়িক স্বস্তি পেলেন তৃণমূলের সংসদ।
মহুয়ার (Mahua Moitra) বিরুদ্ধে চার্টশিট জমা দেওয়ার নির্দেশ ভুল বলেছেন চিহ্নিত করল দিল্লি হাইকোর্ট
ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন তোলার অভিযোগে চলা মামলায় কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) বিরুদ্ধে সিবিআইকে চার্জশিট জমা দেওয়ার যে নির্দেশ লোকপাল দিয়েছিল, সেই নির্দেশকে ভুল বলে চিহ্নিত করল দিল্লি হাইকোর্ট। শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথ শঙ্করের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলার রায় ঘোষণা করে। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে সিবিআইকে চার্জশিট জমা দেওয়ার অনুমতি দিয়ে লোকপাল যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা আইনগত ভাবে সঠিক নয়। ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ২০১৩ সালের লোকপাল আইনের প্রাসঙ্গিক বিধানগুলি বোঝার ক্ষেত্রে লোকপাল ভুল করেছেন। সেই কারণেই ওই নির্দেশ বাতিল করে নতুন করে বিষয়টি বিবেচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চার্জশিটের অনুমতি ঘিরেই মূল বিতর্ক
উল্লেখ্য, গত ১২ নভেম্বর মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) বিরুদ্ধে চলা ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ মামলায় সিবিআইকে চার্জশিট জমা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছিল লোকপাল আদালত। নির্দেশে বলা হয়েছিল, লোকপাল আইন ২০১৩-এর ধারা ২০(৭) এবং ধারা ২৩(১) অনুযায়ী চার সপ্তাহের মধ্যে চার্জশিট জমা দিতে হবে সিবিআইকে। পাশাপাশি সেই চার্জশিটের একটি কপি লোকপাল দপ্তরেও পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল।
তবে সেই সময়ই লোকপাল আদালতের চেয়ারপার্সন জানিয়েছিলেন, চার্জশিট জমা পড়লেও সঙ্গে সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে না। চার্জশিটের পরে সিবিআইয়ের দ্বিতীয় আবেদন বিবেচনা করার পরই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা
লোকপালের এই নির্দেশের বিরোধিতা করে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মহুয়া মৈত্র (Mahua Moitra)। তাঁর হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী নিধেশ গুপ্ত। তিনি আদালতে আবেদন জানান, লোকপালের নির্দেশ সম্পূর্ণ ভাবে বাতিল করা হোক। গত ২১ নভেম্বর এই মামলার শুনানি শেষ হয় দিল্লি হাই কোর্টে। সেই সময় রায়দান স্থগিত রাখে বেঞ্চ। প্রায় এক মাস পর শুক্রবার সেই রায় ঘোষণা করা হল।

আরও পড়ুনঃ নতুন-পুরোনো মিশিয়ে ‘খিচুড়ি’! সময়সীমা বাড়ানোয় দুর্নীতির ছায়া? SSC নিয়ে বিস্ফোরক তরুণজ্যোতি
এক মাসের মধ্যে ফের সিদ্ধান্ত নিতে হবে লোকপালকে
দিল্লি হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, লোকপালকে এক মাসের মধ্যে নতুন করে মহুয়ার (Mahua Moitra) বিরুদ্ধে চলা মামলার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে এবং আইন মেনে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে। আপাতত লোকপালের আগের নির্দেশ কার্যত বাতিল হওয়ায় মামলায় সাময়িক স্বস্তি পেলেন তৃণমূল সাংসদ।












