‘ভালো বাড়ি বানানোয় সবার হিংসা হচ্ছে!’ আক্ষেপ ফল বিক্রি করে রাজপ্রাসাদ বানানো তৃণমূল নেতার

বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও সেই বিতর্কের কেন্দ্রে তৃণমূল নেতার ‘বাড়া বাড়ি’! ফল বিক্রেতা থেকে কীভাবে মাত্র কয়েক বছরে রীতিমতো রাজপ্রাসাদ বানিয়ে ফেললেন ওই তৃণমূল নেতা,এবার তা নিয়েই তুঙ্গে বিতর্ক। এখানেও দুর্নীতির অভিযোগেই সোচ্চার বিরোধী শিবির। যদিও তৃণমূল নেতার অবশ্য দাবি ব্যবসা করেই এহেন বাড়ি হাঁকিয়েছেন তিনি।

মালদহ থেকে মানিকচক যাওয়ার পথে লক্ষ্মীপুর গ্রামে রাস্তার পাশের এক রাজপ্রাসাদ সদৃশ বাড়িতে চোখ আটকাতে যেন বাধ্য। বিশাল তোরণ ওয়ালা হলুদ রঙের বহুতল বাড়িটিকে এড়িয়ে যাওয়ার সাধ্যি নেই কারওই। এহেন বাড়িরই মালিক ইংরেজবাজার ব্লকের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য মাইনুল শেখ। শুধু বিরোধী কিংবা সাধারণ মানুষই নয়, এই বাড়ি থমকে দাঁড় করিয়েছিল খোদ প্রশান্ত কিশোরের টিমকেও।

মালদাহের ইংরেজবাজার ব্লকের কাজিগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের লক্ষ্মীপুর গ্রামেরই বাসিন্দা ওই তৃণমূল নেতা। গ্রামের লোকজনের দাবি, বছর পাঁচেক আগে ওইখানেই পূর্ত দপ্তরের জমিতে ছিল একাধিক ঝুপড়ি। সেরকমই এক ঝুপড়িতেই থাকতেন মাইনুল। মাইনুলের বাবা সুবিরুদ্দিন শেখ এলাকায় ফেরিওয়ালার কাজ করতেন। টাকার অভাবে পঞ্চম শ্রেণীর বেশি আর লেখা পড়াও হয়নি ওই তৃণমূল নেতার। পেটের দায়ে এককালে বাজারে ফলও বিক্রি করেছেন তিনি।

কিন্তু বদলেছে দিন। এখন সেই মাইনুলের বহুতল বাড়িতে একাধিক শীততাপনিয়ন্ত্রক যন্ত্র, গ্যারেজে দাঁড়িয়ে ২টি এসইউভি গাড়ি, দুটি মোটর সাইকেল। পাশেই সিমেন্ট বালি রডের বিশাল দোকান। রয়েছে ট্র‍্যাক্টরও। কিন্তু কীভাবে হল সবকিছু? মাইনুল শেখের দাবি, ‘ফল বিক্রির সময়ই আম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তখন আমের ব্যবসা করতাম। সেখান থেকেই জমি কেনাবেচার কাজে সহযোগিতা করতে শুরু করি। এখন জমি কেনাবেচার পাশাপাশি নিজের দোকানও আছে। এরপর ২০১৩ সাল থেকে তৃণমূলের কর্মী হিসেবে কাজ করি। ২০১৮ সালে দল পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট দেয়। মানুষের আশীর্বাদে ভোটে জিতি।’

যদিও এই দাবি পুরোপুরি মানতে নারাজ স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ এলাকার জমি দখল থেকে পুকুর ভরাটের মতন একাধিক অভিযোগ রয়েছে ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। জেলা নেতৃত্ব এবং পুলিশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকায় কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি তাঁর বিরুদ্ধে। এমনকি মানুষের টাকা লুটপাট করারও অভিযোগ এনেছে বিজেপি।

যদিও ওই তৃণমূল নেতার দাবি, ‘ভালো বাড়ি করেই সবার কুনজরে পড়ে গিয়েছি।’ এলাকায় লকডাউনে ৫ লক্ষ টাকার চাল বিলি করেছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। বিলি করছেন বস্ত্রও। ‘মানুষের টাকা লুঠ করার প্রশ্নই আসে না’ সাফ দাবি ওই তৃণমূল নেতার। যদিও সেই দাবি যে মানতে নারাজ স্থানীয়রা তা বলাই বাহুল্য।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর