WBCS পরীক্ষায় র‍্যাঙ্ক ২৭, BDO হয়ে পরিবারের সম্মান বাড়ালেন মালদার পরিযায়ী শ্রমিকের ছেলে

Published On:

বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাবা পেশায় পরিযায়ী শ্রমিক। ছোটবেলা কেটেছে দারিদ্রের সাথে লড়াই করে। দারিদ্রতা অবশ্য কাবু করতে পারেনি তাকে। তপস্যা ও মনের জোড়কে সঙ্গে করে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিডিও (Block Development Officer) হতে চলেছেন মালদার এক পরিযায়ী শ্রমিকের ছেলে। মালদার (Maldah) হরিশ্চন্দ্রপুরের এই যুবকের নাম কেশব দাস (২৮)। কেশবের এই সাফল্যে খুশির ঢল নেমেছে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নম্বর ব্লকের হরদমনগর গ্রামে।

কেশবের এই সাফল্যের কথা শুনে বহু মানুষ তার বাড়ি ছুটে যাচ্ছেন ফুল ও মিষ্টি নিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে। কেশব জানিয়েছেন, তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষায় বসেন ২০২০ সালে। গত ২ ফেব্রুয়ারি এই পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষার ‘এ’ বিভাগে পশ্চিমবঙ্গে ২৭ তম স্থান অর্জন করেছেন তিনি।

কেশব হরদমনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালের ৫৭ শতাংশ নম্বর নিয়ে মাধ্যমিক, ৭৬ শতাংশ নম্বর নিয়ে ২০১৩ সালে দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর সংস্কৃত অনার্স নিয়ে ভর্তি হন মালদহ কলেজে। ২০১৬ সালে উত্তীর্ণ হয় প্রথম বিভাগে। এরপর ৭৭ শতাংশ নম্বর নিয়ে এমএ পাস করেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

কেশবের বলেছেন, “পরীক্ষার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম মালদহে হোস্টেলে থাকার সময় থেকেই। কোচিং নিতে পারিনি আর্থিক কারণে। টিউশন পড়িয়ে খরচ জোগাড় করতাম পড়াশোনার। শিক্ষক হওয়ার ইচ্ছা ছিল ছোটবেলা থেকে। এরপর পাল্টে ফেলেছিলাম লক্ষ্য।”

কেশব দাসের বাবা জানিয়েছেন তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। সবার ছোট কেশব। কোনদিন বকাঝকা করতে হয়নি তাকে পড়াশোনার জন্য। দিনমজুরি করে ও অন্যের জমিতে কাজ করে কোন রকমের সংসার চালান তিনি। এমনকি স্ত্রীর কানের দুল পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছিল ছেলের পড়াশোনার জন্য। এখনও ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ শোধ করতে পারেননি তিনি।

BDO

 

এই পরিযায়ী শ্রমিক বাবার আক্ষেপ মাধ্যমিক পাশ করার পর তিনি ছেলেকে একটি সাইকেলও কিনে দিতে পারেননি। তার ছেলে প্রায় ছয় কিলোমিটার পথ হেঁটে পড়াশোনা করতে যেত দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়। এমনকি কলেজে পড়ার সময় ল্যাপটপ অব্দি দিতে পারেননি ছেলেকে।

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

X