বাংলাহান্ট ডেস্ক: সালটা ২০১২,পাকিস্তানের সোয়াট উপত্যকাতে মালালার মাথা লক্ষ্য করে ছোড়া হল গুলি। তালিবান জঙ্গীদের গুলি মাথায় এসে লাগার পর কোমায় চলে গিয়েছিল মালালা। সে যাত্রায় কোনভাবে তাকে বাঁচানো হয়েছিল।
ভয় পায়নি মালালা,তালিবানি ফতোয়ার বিরুদ্ধে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছেন। বলেছেন, ” আমি তালিবানদের থেকে বদলা চাই না। আমি তালিবানদের ছেলে মেয়েদের জন্য শিক্ষা চাই। ”
মৃত্যু ভয় সবকিছুকে উপেক্ষা করেই এগিয়ে গেছেন স্বপ্নের দিকে। যে দেশে নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ সেই দেশের মেয়ে হয়ে শেষ করলেন গ্রাজুয়েশন। মালালা নিজে স্বপ্ন দেখলেন,স্বপ্ন দেখালেন হাজার হাজার মালালাকে।
মালালা বললেন,” যদি একজন পুরুষ ধ্বংস করতে পারেন সব কিছু,তাহলে একজন মহিলা কেন সবকিছু বদলাতে পারেন না?”
মালালা নারী শিক্ষার প্রসার নিয়ে শুরু করলেন প্রচার। পেয়েছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার।
মৌলবাদীদের শাসনতন্ত্র থেকে বেরিয়ে মালালা বর্তমানে বৃটেনের বাসিন্দা। বৃটেনের শিক্ষা প্রচারক হিসেবেও পরিচিত মালালা। কিন্তু এবার মালালার শিক্ষা প্রচারে বাধা পড়ল। সম্প্রতি কানাডার কুইবেক এর শিক্ষা দপ্তর একটি আইন পাশ করেন। সেই আইনে বলা হয় কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় চিহ্ন যুক্ত কোন কিছু সাথে রাখা যাবে না। শিক্ষক,আইনজীবী ও পুলিশ অফিসারদের ক্ষেত্রে এই আইন প্রযোজ্য। মালালা ইসলাম ধর্মের অন্যতম চিহ্ন হিজাম পড়েন। আর সেই ভাবেই তিনি কুইবেকের পড়াতেও যেতেন। সুতরাং নতুন আইন মোতাবেক মালালা আর শিক্ষা দান করতে পারবেন না।
এই আইন পাশ করার পর থেকেই খুশি নন অনেকে। উঠেছে সমালোচনার ঝড়। কুইবেকের শিক্ষা মন্ত্রী বলছেন ধর্ম নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্যই এমন আইন পাস করানো হয়েছে। এই আইনটি পাস হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রী মালালার সাথে দেখা করেন। সেই দিনের একটি ছবি সমালোচনার ঝড় আরো বাড়িয়ে দেয়।
একটি সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষা মন্ত্রীকে মালালার বিষয়ে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ” আমি তাকে জানিয়েছি যে কুইবেকে তিনি পড়ালে আমরা সম্মানিত হব। কিন্তু যে কোন উদার, সহিষ্ণু কোন দেশে শিক্ষকরাও ধর্মচিহ্ন নিয়ে পড়াবেন এরকম কোন উদাহরণ নেই। “