বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি সন্তোষ ট্রফিতে ভালো পারফরম্যান্স করলেও ফাইনালে 117 মিনিটের মাথায় গোল খেয়ে শেষ পর্যন্ত রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলা দলকে। তবে বাংলার খেলোয়াড়রা ফুটবলের এই বড় মঞ্চে দলের মুখ উজ্জ্বল করে তোলে আর এবার বাংলা দলের দুই ফুটবলারকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী সোমবার এই দুই ফুটবলারের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে। রাজ্যের ক্রীড়া মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের এদিনের এই ঘোষণাটি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
সন্তোষ ট্রফি ফাইনালে শেষপর্যন্ত হেরে গেলেও কেরলের সঙ্গে ম্যাচে প্রথমে কিন্তু এগিয়েই যায় বাংলা। তাদের হয়ে সেদিন গোল করেন নাগেরবাজারের বাসিন্দা দিলীপ ওঁরাও। এরপর অবশ্য শেষ মুহূর্তের গোল এবং ট্রাইবেকারে কেরলের কাছে পরাজিত হলেও ছেলের এই পারফরম্যান্সে বর্তমানে যথেষ্ট খুশি তার পরিবার। বাবা পুরসভার সাফাই কর্মী হিসেবে কর্মরত এবং তার মা বাড়ি বাড়ি গিয়ে রান্নার কাজ করেন। তাদের অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে বাড়িতে ইলেকট্রিক পর্যন্ত নেই! ফলে এহেন পরিস্থিতিতে চাকরির নিয়োগপত্র তাদের দুর্দশা ঘোচাবে বলেই মনে করছে ক্রীড়ামহল।
অপর এক ফুটবলার তথা বাংলা দলের অধিনায়ক মনোতোষ চাকলাদারের অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। কাঠের মিস্ত্রীর সন্তান মনোতোষের বাড়ি ব্যান্ডেলে। ছোট ঘরের মধ্যেই বাবা-মা এবং বোনের সঙ্গে বসবাস করে সে। কিছুদিন পূর্বে বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তবে দারিদ্র্যের সঙ্গে সংঘর্ষ জারি রয়েছে বাংলা দলের বর্তমান অধিনায়কের। সম্প্রতি তার ক্লাব ইউনাইটেড স্পোর্টসের কর্তা নবাব ভট্টাচার্য লেখেন, “ওর একটা চাকরির খুব প্রয়োজন।”
এদিন রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অরূপ বিশ্বাসের চাকরি সংক্রান্ত এই ঘোষণা তাদের ঘরে খুশির খবর বয়ে এনেছে। অরূপ বিশ্বাস বলেন, “দিলীপ ওঁরাও ও মনোতোষ চাকলাদারকে আমরা চাকরি দিতে চলেছি। ওরা দুজনেই খুব গরীব পরিবার থেকে খেলার জগতে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী বর্তমানে ওদের দারিদ্র্যের খবর জানতে পেরেই নিজের কোটা থেকে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
বাংলা দলের হয়ে ফুটবল খেললেও একাধিক সময় দারিদ্র্যের সঙ্গে সংঘর্ষ জারি থাকে একাধিক ফুটবলারের। তাদের দুর্দশার কথা সকলেরই জানা! কিন্তু শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার ফলে এই দুই ফুটবলারের দারিদ্র্য কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।