বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পুজোর মুখে টানা পাঁচ ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলবন্দি হয়ে পড়েছিল কলকাতা। যাদবপুর থেকে ভবানীপুর, পার্ক সার্কাস থেকে একবালপুর, শহরের রাস্তায় জমে থাকা জলই সেই রাতে পরিণত হয়েছিল মৃত্যুফাঁদে। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারান অন্তত ১২ জন। বুধবার দার্জিলিংয়ে প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে সেই মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এদিন ঘোষণা করেন যে, আগামী ১৭ অক্টোবর কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি চত্বরের এক মণ্ডপে আহ্বান করা হবে মৃতদের পরিবারকে। সেদিন তাঁদেরকে রাজ্যের তরফ থেকে দেওয়া হবে আর্থিক সাহায্য ও পরিবারের একজন সদস্যকে দেওয়া হবে সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র।
মৃত্যুর জন্য সিইএসসি-কে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)
প্রতিপদের রাতের প্রবল বৃষ্টিতে শহরজুড়ে কোথাও কোথাও হাঁটুতে কোথায় কোথাও কোমর সমান জল জমে যায়।। মোমিনপুর, নেতাজিনগর, ঠাকুরপুকুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা মিলিয়ে মোট মৃত্যু হয় ১২ জনের। এই মৃত্যুগুলির জন্য বিদ্যুৎ সংস্থা সিইএসসি-কে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এই দুর্ঘটনার পর সিইএসসির দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তারা কিছু করেনি।” তিনি জানিয়েছিলেন, প্রতি পরিবারের জন্য অন্তত ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ এবং চাকরি দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল সিইএসসিকে। তবে সংস্থা কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায়, রাজ্য সরকারই শেষ পর্যন্ত এগিয়ে আসে। মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে ২ লক্ষ টাকার রাজ্য অনুদান ঘোষণা করেন, পরে জানান যদি সিইএসসি চাকরি না দেয়, তবে রাজ্যের তরফে স্পেশাল হোমগার্ড হিসেবে একজন সদস্যকে নিয়োগ করা হবে।
বুধবার দার্জিলিংয়ের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) এই প্রসঙ্গে ফের বলেন, “কলকাতায় একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল। জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কলকাতার ১০ জন-সহ মোট ১২ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ১৭ তারিখ ওনাদের পরিবারকে ডাকা হবে। হাতে তুলে দেওয়া হবে নিয়োগপত্র ও আর্থিক সাহায্য।”
অর্থাৎ, কলকাতার ভয়াবহ জলদুর্ঘটনার পর প্রায় এক সপ্তাহ কেটে গিয়ে এবার রাজ্য নিজেই নিল মৃতদের পুনর্বাসনের ভার। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা কার্যত প্রমাণ করল, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর দায় এড়িয়ে গেল সিইএসসি, দায়িত্ব নিল রাজ্য প্রশাসন।
আরও পড়ুনঃ নিখোঁজ বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক? বিধানসভা ভোটের আগে বিধায়কের নামে পোস্টার পড়তেই হইচই উত্তরপাড়ায়
এই দুর্ঘটনার পর থেকেই শহরে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজনৈতিক মহল সর্বত্রই প্রশ্ন উঠেছিল শহরের বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনা নিয়ে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকে সিইএসসি নীরব থাকলেও মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) উদ্যোগে শুরু হয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা নিঃসন্দেহে কিছুটা স্বস্তি এনে দিল বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারানো ১২ জনের পরিবারের জন্য।