বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের শংসাপত্র অর্থাৎ SC সার্টিফিকেট পাওয়ার নিয়মে বড় পরিবর্তনের পথে রাজ্য সরকার। নবান্নে সরকারি পরিষেবা সংক্রান্ত রিভিউ বৈঠকে এই প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এতে সম্মতি জানান। তবে বিরোধীরা এটিকে ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতির অংশ বলেই তোপ দেগেছেন।
SC শংসাপত্রের নতুন নিয়মের ঘোষণা মমতার (Mamata Banerjee)
এতদিন অব্দি নিয়ম ছিল, মা ও বাবার কারও SC শংসাপত্র না থাকলে সন্তানের জন্য শংসাপত্র পেতে রক্তের সম্পর্ক থাকা দু’জনের শংসাপত্র প্রয়োজন হত। নবান্ন সূত্রে খবর, এবার সেই জটিল নিয়ম বদলাতে চলেছে সরকার। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, পরিবারের মধ্যে অন্তত একজনের SC শংসাপত্র থাকলেই আবেদনকারী শংসাপত্রের অধিকারী হবেন। এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বৈঠকে স্পষ্ট বার্তা দেন যে, যোগ্য মানুষ যাতে শংসাপত্র থেকে বঞ্চিত না হন, তবে অযোগ্যরা যাতে তালিকায় ঢুকতে না পারেন, তার জন্য কড়া নজরদারি রাখতে হবে।
তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন যে, “এই সরকার তফসিলি উপজাতিদের শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে জালিয়াতি করেছে, তা প্রমাণিত। এ বার নতুন নিয়ম চালু করে ভুয়ো SC শংসাপত্র দিতে চাইছে। এ ক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারের মুখ পুড়বে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আসলে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের একটি বিশেষ অংশের মানুষের ভোট নিশ্চিত করতে চান।’’
একইসঙ্গে মতুয়া ও নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন মতুয়া উন্নয়ন পর্ষদকে কার্যকর করার পাশাপাশি বাগদায় অম্বেডকরের নামে তৈরি স্কুল চালু করতে। উদ্বাস্তু মতুয়াদের জন্য জমির পাট্টা দেওয়ার প্রসঙ্গও ওঠে এদিনের বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) আশ্বাস দেন, দ্রুত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়া যোগ্যশ্রী প্রকল্পের সীমাবদ্ধতা নিয়েও আলোচনা হয়, যেখানে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গে পর্যাপ্ত সুফল না পৌঁছনোর কথা উল্লেখ করেন প্রতিমা মণ্ডল।
আরও পড়ুনঃ অভিষেকের ডাকা বৈঠকেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব! বিতর্কে জড়ালেন কেষ্ট-কাজল, উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি
মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) নির্দেশ অনুযায়ী, শীঘ্রই নতুন নিয়ম কার্যকর হতে পারে। প্রশাসনিক মহল মনে করছে, এই পদক্ষেপে প্রকৃত উপকারভোগীরা আরও সহজে পরিষেবা পাবেন। তবে বিরোধীদের দাবি, এই পরিবর্তন রাজনৈতিক স্বার্থে আনা হচ্ছে। ফলে নবান্নের এই সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক তরজা যে আরও তীব্র হবে, তা একপ্রকার নিশ্চিত।