বাঘ-হাতির দেখাশোনায় বাড়বে কর্ম সংস্থান! নয়া বছরেই বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জেলা সফরে বেরিয়ে জেলায়-জেলায় একের পর এক ঘোষণা করে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গতকালই পর্যটকদের থেকে অতিরিক্ত ফিস নেওয়ার কারণে বনদপ্তরকে এক হাত নিয়েছিলেন তিনি। একইসাথে নির্দেশ দিয়েছেন রাজাভাতখাওয়ার পর্যটকদের থেকে কোনো ফিস নিতে পারবে না বনদপ্তর। তারপরেই এবার উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে বাঘ-হাতির আনাগোনা নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যেই এক বিরাট ঘোষণা করে ফেললেন তিনি।

বাঘ-হাতির দৌলতে হবে কর্ম সংস্থান, বড় ঘোষণা মমতার (Mamata Banerjee)

গত বছরের ডিসেম্বরে টানা ১০ দিন বন কর্মী থেকে বনদপ্তরের সকলকে একেবারে নাকানি-চোবানি খাইয়েছিল বাঘিনী জিনাত। তারপর থেকেই পুরুলিয়া সীমান্ত এলাকায় উঁকি দিচ্ছে জিনাতের সঙ্গীরা। পিছিয়ে নেই হাতির দলও। ইদানিংকালে উত্তর থেকে দক্ষিণ গোটা বাংলা জুড়ে হাতির দাপট বেড়েই চলেছে। সূত্রের খবর ইদানিং বাঘ এবং হাতির আনাগোনা বেড়েছে পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলে। তাই এবার বাঘ-হাতির গতিবিধির ওপর নজরদারির জন্য জঙ্গল এলাকার স্থানীয় ছেলেদেরই যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক সভা থেকে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘এবার বাঘ-হাতির মুভমেন্ট দেখার জন্য, লোকাল ট্রাইবাল ছেলেদের যুক্ত করো।’

প্রসঙ্গত একবিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে শীতের সময় খাবারের খোঁজে ওড়িশা,ঝাড়খন্ড থেকে বাংলার জঙ্গলমহল এলাকায় পাড়ি দিত হাতির দল।  পরবর্তীকালে ওই হাতিদের একাংশ মানুষের সংস্পর্শে আসতে শুরু করে। তারপর হাতির দল তাদের নিতে অস্বীকার করে। বনদপ্তরের পরিভাষায় এই দলছুট হাতির দলকে এক কথায় ‘রেসিডেন্সিয়াল’ বলা হয়। এই মুহূর্তে দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলমহলে প্রায় শতাধিক ‘রেসিডেন্সিয়াল’ হাতি রয়েছে। এছাড়াও প্রত্যেক শীতে ওড়িশা, ঝাড়খন্ড থেকেও আসে হাতির দল।

রাজ্যে হাতির সংখ্যা কমতে-কমতে একটা সময় ৭৫-এ দাঁড়িয়েছিল। যা এখন বেড়ে হয়েছে ৮০০। কিন্তু এই হাতির প্রজননে এখনই লাগাম টানা না গেলে আগামীদিনে সংখ্যাটা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে বলেই মনে করছেন বনদপ্তরের কর্তারা। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে চিঠিও পাঠিয়েছে রাজ্য।

আরও পড়ুন: মহিলাকে…! ‘হেভিওয়েট’ তৃণমূল বিধায়কের আশ্লীল আচরণ! কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

এখানে বলে রাখা ভালো, একটা সময় জঙ্গলমহলের বনাঞ্চলে আগুন ধরে যাওয়ার কারণে এবং কাঠ পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যের কারণে অনেকটাই খালি হয়ে গিয়েছিল জঙ্গলমহলের বনাঞ্চল। কিন্তু গত কয়েক বছরের বনদপ্তরের তরফে রাজ্যের জঙ্গল বৃদ্ধির উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। ইদানিং জঙ্গলের ঘনত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি বেড়েছে বন্য জীবজন্তুর সংখ্যাও। ফরেস্ট সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজ্যে শতকরা .৭ শতাংশ বনাঞ্চল বৃদ্ধি পেয়েছে।

Mamata Banerjee

উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বাঘের উপস্থিতিও। বনদপ্তর সূত্রে খবর জিনাতের আগমনের পরবর্তী সময় থেকেই রাজ্যে বাঘের আনাগোনা বেড়েছে। বনকর্তাদের দাবি পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং ঝাড়গ্রাম সংলগ্ন এই ঘন জঙ্গলের মধ্যেই রয়েছে অনেক ছোট ছোট জলাশয়। যা বাঘের জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা। তাই এবার ফি বছর বাঘ-বাগিনীর আগমন ঘটাও অস্বাভাবিক নয়। আর এই বাঘ-হাতির আগমন ঘিরে মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) নির্দেশে নতুন করে কর্মসংস্থানে পেতে চলেছেন জঙ্গল এলাকার ছেলেরা। বিশেষজ্ঞদের মতে বন কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় তরুণদের বাঘ-হাতির নজরদারির কাজে লাগানোর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এরফলে জঙ্গল এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা আরও বেশি সুনিশ্চিত করা যাবে।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর