বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলার কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন, কারণ পিএম কিষান সম্মান নিধির সরকারি সাহায্য পাচ্ছেন না তারা। নির্বাচনের আগে এই ইস্যুতেই বারবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনের পরে এই বিষয়ে সরাসরি নজর দিয়েছেন মমতা। যার জেরে ইতিমধ্যেই রাজ্যে কৃষক সম্মান নিধির টাকা পেয়েছেন প্রায় সাত লক্ষ কৃষক। তবে কৃষকদের উদ্দেশ্যে চিঠি লিখে এর আগেও মমতা জানিয়েছিলেন, পিএম কিষান সম্মন নিধির তুলনায় রাজ্যের প্রকল্প কৃষক বন্ধু অনেক ভালো। এমনকি নির্বাচনের আগে কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকার পরিমাণ বাড়িয়ে পাঁচ হাজার থেকে ছ হাজারও করেছিলেন তিনি।
নির্বাচনের পরে সেই প্রতিশ্রুতি তো রাখলেনই, তার ওপর কৃষকদের জন্য এবার বড় মাস্টার স্ট্রোক দিলেন মমতা। কারণ কৃষক বন্ধু প্রকল্পের টাকার পরিমান এক লপ্তে বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে দেওয়া হল। অর্থাৎ এই প্রকল্পের আওতায় যে কৃষকরা বছরে ৫ হাজার টাকা পেতেন এবার থেকে তাদের ১০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন। শুধু তাই নয়, এক একরের কম জমি থাকলে দুহাজার টাকা দেওয়া হতো সরকারের পক্ষ থেকে, এবার তাও বাড়িয়ে চার হাজার করার সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন। করোনা আবহে এই প্রথমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক বসল নবান্নের তেরো তলায়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম সহ আরো অনেকেই। ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও৷ তাদের সকলের উপস্থিতিতেই এই সিদ্ধান্ত নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন নতুন মুখ্য সচিব হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদীও।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এর আগেই ১৮থেকে ৬০ বছর বয়সী যেকোনো কৃষকের মৃত্যুতে পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই খুশি রাজ্যের কৃষকরা। ইয়াসের কারণে নোনা জল ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক কৃষিজমি। সেগুলিকে চাষযোগ্য করে তুলতেও এক কোটি কুড়ি লক্ষ টাকা খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।
কিছুদিন আগেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত। তিনি পরিষ্কার জানিয়েছিলেন, পুঁজিবাদী শক্তিকে জবাব দিয়েছে বাংলা। আগামী দিনে বাংলা যেভাবে ভাববে, অনুসরণ করবে গোটা দেশ। অনেকের মতে, কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে তারই একটা ছোট্ট সূত্রপাত করলেন মমতা। কারণ এর আগেও কৃষকদের ফসলের ন্যূনতম দাম নিয়ে কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই অনেকেই মনে করছেন কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে এবার কেন্দ্রকেই সরাসরি বার্তা দিলেন তিনি।