বাংলাহান্ট ডেস্কঃ চিন্তায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় ! (Mamata Banerjee) কিট নিয়ে আশঙ্কার সম্ভাবনা। “কিট নেই। কেন্দ্র কিট তুলে নিয়েছে। ২ রকম কিটই তুলে নিয়েছে। কিট দিতে পারছে না কেন্দ্র। মাত্র ২৫০০ কিট দিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কিট আসছে না। এহেন পরিস্থিতিতে আপনারাই বুঝে নিন। সময় মতো ঠেকাতে না পারলে বিপদ আছে।” নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এদিন করোনা (corona) নিয়ে আশঙ্কার সুর শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী গলায়। করোনা আতঙ্কের শুরু থেকেই রাজ্যবাসীকে নিয়ম-নীতি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। অযথা ভয় না পেয়ে সাবধানে থাকতে বলেছেন। করোনা মোকাবিলা নিয়ে আশ্বস্ত করেছেন বার বার। কিন্তু এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে পর্যাপ্ত কিটের অভাবে আশঙ্কার সুর মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। পাশাপাশি, মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানালেন, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে ২৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে এখন ৩০০।
রাজ্যে সঠিকভাবে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে না। যতটা টেস্টিং দরকার, ততটা হচ্ছে না। বারংবার এই অভিযোগে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে সেই অভিযোগ খণ্ডন করে মুখ্যসচিব বলেন, “আমরা টেস্ট করছি না, এটা ঠিক না। Rapid টেস্ট কিট সব খারাপ আছে। পুরো সময় ও শক্তি অপচয় হয়েছে Rapid test-এ।” মুখ্যসচিব জানান, “গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৫৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। রাজ্য সরকার অন্য জায়গা থেকে টেস্ট করাচ্ছে। সেইভাবেই এখনও পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৭,০৭৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।”
এরপরই কিট প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বাংলার নামে বলছে, করছে না। এটা ঠিক না। যা দিয়েছিল সবটা ডিফেক্টিভ। Rapid টেস্ট পুরো ভুল। দ্বিতীয় দফায় যে কিট পাঠিয়েছিল, তাও তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। র্যাপিড টেস্ট কিট, বিজিআই, আরটিপিসিআর কিট, সবকিছুই ফেরত নিয়ে নিয়েছে কেন্দ্র। অ্যান্টিজেন কিট বাংলায় পাওয়া যায় না। আমরা টেস্ট করিনি বলে মিথ্যে বলছিল, উত্তর কে দেবে? স্যাম্পেল পরীক্ষার জন্য একটি মিডিয়া লাগে তার সরবরাহ অত্যন্ত কম। আপনারা বুঝতে পারছেন আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে? কেন্দ্রের কী পরিকল্পনা তা বোঝা যাচ্ছে না। আক্রান্ত প্রতি ২ সোয়াব কিট লাগে। দরকার ১৪,০০০-এর বেশি কিট। কিন্তু কেন্দ্র দিয়েছে ২৫০০ কিট। স্বাস্থ্য দফতর আগে থেকে কিছু অর্ডার দিয়ে করিয়েছে। আরও অর্ডার দেওয়া হয়েছে। কবে পাব জানি না। আমরা ৪ লক্ষ ১৯ হাজার PPE বিতরণ করেছি। কেন্দ্র দিয়েছে মাত্র ৭,০০০ PPE।”
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, শিলিগুড়ি থেকে নতুন পজেটিভ কেস এসেছে। মুখ্যসচিব বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এরফলে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০০। তবে এদিন করোনায় নতুন কোনও মৃত্যুর খবর নেই। রাজ্যে মৃতের সংখ্যা এখনও ১৫। পাশাপাশি, মুখ্যসচবি আরও জানান, মালদায় করোনার কোনও পজেটিভ কেস নেই। মোট ৮৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল। সবকটি-ই নেগেটিভ এসেছে।
করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কায় কোভিড হাসপাতালগুলিতে মোবাইলের ব্যবহার বন্ধ করা হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। ইতিমধ্যেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষগুলির সঙ্গে CMOH-দের এই মর্মে আলোচনাও হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আজ সাংবাদিক বৈঠকে মোবাইল ব্যবহার নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকেও। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সংক্রমণ ছড়ানোর অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে মোবাইল।” এদিকে, রাজ্য সরকার হাসপাতালে মোবাইলের ব্যবহার বন্ধ করতে পারে, এমন খবর সামনে আসতেই তার বিরোধিতায় সরব হয়েছে বিজেপি। রাজ্য সরকার তথ্য গোপনের চেষ্টা করছে বলে দাবি করেছে বিজেপি শিবির।