বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শনিবার ‘খেলা হবে দিবস’-এর সকালে রাজ্যের ক্রীড়া উন্নয়নের দীর্ঘ তালিকা তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সকালে এক্স (X) মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “আজ ‘খেলা হবে দিবস’। এই উপলক্ষে সকল ক্রীড়াবিদ এবং ক্রীড়াপ্রেমীকে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহামেডান স্পোর্টিং সহ রাজ্যের গ্রাম-শহরের সকল ক্লাবকেও এই দিনে আমার শুভেচ্ছা জানাই।”
এক্স পোস্টে ‘খেলা হবে দিবস’ এর বিশেষ তাৎপর্য তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)
এরপর মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) আজকের বিশেষ দিনের তাৎপর্য তুলে ধরে আরও কিছু কথা লিখেছেন সামাজিক মাধ্যমে। তিনি লেখেন, “২০১১ সালের পর থেকে বাংলায় অন্যান্য নানান ক্ষেত্রের মতো ক্রীড়াক্ষেত্রেও প্রভূত উন্নয়ন করা হয়েছে। তার ফলে আজ বাংলা ফুটবল থেকে শুরু করে জিমন্যাস্টিক্স, যোগ ব্যায়াম, আর্চারি, টেবিল টেনিস, সব কিছুতেই জাতীয় স্তরে এগিয়ে আছে।” রাজ্যের ক্রীড়া দপ্তরের বাজেটের প্রসঙ্গ তুলে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের সময়ে যুব কল্যাণ ও ক্রীড়া দপ্তরের বাজেট বরাদ্দ ৬.৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে (২০১১ সালের ১২৬ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ২০২৫-২৬ সালে হয়েছে ৮৪০ কোটি টাকা)।”
এছাড়া তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের ক্রীড়া প্রাঙ্গন কি কি উন্নতি সাধন করেছে সেই প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) লেখেন, “আমাদের সময়ে হয়েছে ৫৮টি স্টেডিয়াম, ৪২টি যুব হোস্টেল, ৫টি ইন্ডোর স্টেডিয়াম, ৭৯৫টি মিনি-ইন্ডোর স্টেডিয়াম, ৪ হাজারেরও বেশি মাল্টি-জিম, ৬টি সুইমিং পুল, ৪২৩টি খেলার মাঠ। এছাড়া, ৮টি স্পোর্টস অ্যাকাডেমি শুরু করা হয়েছে যার মধ্যে আছে ফুটবল, মহিলা ফুটবল, তীরন্দাজী, টেনিস, টেবিল টেনিস, সাঁতার, রাইফেল শ্যুটিং এবং ব্যাডমিন্টন অ্যাকাডেমি।”
এরপর মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) জানান, “ভারতীয় ফুটবলে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান ‘বঙ্গ বিভূষণ’ দেওয়া হয়েছে এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য তাদের ২৭ কোটি টাকার বেশি অনুদান দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ‘খেলাশ্রী’ প্রকল্পের অধীনে খেলাধুলার উন্নতির জন্য ৩৪ হাজারেরও বেশি ক্লাবকে অনুদান (প্রতি ক্লাবকে ৫ লক্ষ টাকা) দেওয়া হয়েছে।”
খেলাধুলার প্রসারে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা প্রসঙ্গে আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “১,৩৫২টি কোচিং ক্যাম্পকে ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে এবং ৩৪টি ক্রীড়া সংস্থাকে বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা করে প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা ফুটবল দলের ২১ জন খেলোয়াড়কে আমরা রাজ্য পুলিশে চাকরি দিয়েছি।”
তিনি আরও জানান, “যুবকদের খেলাধুলায় উৎসাহিত করতে এবং পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের মানুষকে মূলস্রোতে আনতে আমরা সুন্দরবন কাপ, জঙ্গলমহল কাপ, হিমাল-তরাই-ডুয়ার্স কাপ এবং রাঙামাটি কাপ আয়োজন করছি। শুধু তাই নয়, যারা ভালো খেলছে তাদের অনেককেই সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে।”
এছাড়াও খেলোয়াড়দের অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) জানান যে, “আমরা বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদদের বিভিন্ন পুরস্কার দিয়ে থাকি। ৪৬০ জন বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ‘খেল সম্মান’, ‘বাংলার গৌরব’, ‘ক্রীড়াগুরু’, ‘জীবনকৃতি’ পুরস্কার পেয়েছেন। ১,৫৮০ জন স্বনামধন্য এবং অবসরপ্রাপ্ত ক্রীড়াবিদকে মাসিক পেনশন দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, বাংলার এভারেস্ট জয়ী পর্বতারোহীদের জন্য রাধানাথ শিকদার-তেনজিং নোরগে অ্যাডভেঞ্চার অ্যাওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। মহিলা পর্বতারোহীদের জন্য চালু হয়েছে ‘ছন্দা গায়েন সাহসিকতা পুরস্কার’ (ছন্দা গায়েন ছিলেন প্রয়াত তরুণী পর্বতারোহী)। আমরা গর্বিত যে আমাদের সময়ে ২১ জন বাঙালি পর্বতারোহী এভারেস্ট জয় করেছেন। ”
আরও পড়ুনঃ বাংলায় কথা বলায় মালদার যুবককে বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’, কীভাবে বাড়ি ফিরলেন আমির?
এদিন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) আরও বলেন যে, “ছেলেমেয়েদের কাজের সুযোগ করে দেবার জন্য ১২টি যুব বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও ৯১২টি যুব কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও চালানো হচ্ছে।” এছাড়া, এদিন মুখ্যমন্ত্রী তার দীর্ঘ পোস্টে জানান যে, “আগামীদিনেও বাংলায় খেলাধুলোর উন্নয়নে আমরা এভাবেই কাজ করে যাবো।”