বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বুধবার হলদিয়ায় মনোনয়ন জমা দিয়ে নন্দীগ্রামে ফিরে মন্দিরে মন্দিরে পুজো দিয়ে প্রচার কর্মসূচি চালাচ্ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেই সময় ঘটে যায় এক বড়সড় দুর্ঘটনা। পায়ে, কোমরে আঘাত পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুকেও ব্যথা শুরু হয় ওনার। মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলায় সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাকে পিছন দিক থেকে চার-পাঁচজন মিলে ধাক্কা দেয়। আমি পড়ে গিয়ে আঘাত পাই।
এই ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তড়িঘড়ি গ্রিন করিডর করে নন্দীগ্রাম থেকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। এসএসকেএম হাসপাতালে ওনাকে ভর্তি করানো হয়েছিল। দুর্ঘটনার পরের দিন একটি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, গাড়ির বনেটে উঠে নমস্কার করার সময় দরজা চেপে গিয়ে এই বিপত্তি ঘটে। তিনি তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের শান্ত থাকার আবেদন জানান।
বুধবারের ঘটনা নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন নবান্নে রিপোর্ট পেশ করে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কোনও কথাই উল্লেখ ছিল না। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের উপর ভিত্তি করে সেদিনের ঘটনাকে নিছকই দুর্ঘটনা বলা হয়েছিল। এরপর নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে ঘটনার তদন্তের জন্য দুই পর্যবেক্ষককে নন্দীগ্রামে পাঠানো হয়। বিবেক দুবে আর অজয় নায়ের-এর রিপোর্টেও ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ নেই। ওনাদের মতেও নিছকই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রচারে বেরিয়ে এভাবে আঘাত পাওয়ার পর রাজনৈতিক মহলে চরম বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা কমিশন এবং বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছিল। জেলায় জেলায় শুরু হয়েছিল প্রতিবাদ। আরেকদিকে, বিজেপি এই ঘটনাটিকে নাটক বলে আখ্যা দিয়েছিল। এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন হল, বুধবারের এই দুর্ঘটনায় সবথকে বেশি লাভবান কে হচ্ছেন? সম্প্রতি সি ভোটারের সমীক্ষায় এই দুর্ঘটনার ফলে নির্বাচনে কে বেশি লাভবান হচ্ছেন সেটার তথ্য সামনে এসেছে।
সমীক্ষা অনুযায়ী, সেদিনের ঘটনাকে ষড়যন্ত্র বলে মানছেন ৪৪ শতাংশ মানুষ। আরেকদিকে ৩৯ শতাংশ মানুষ বলছেন সেটি কোনও ষড়যন্ত্র ছিল না, সেটি একটি দুর্ঘটনা মাত্র। আর ১৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না। আরেকদিকে, ওই ঘটনায় সিবিআই সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন ৪৯ শতাংশ মানুষ। আবার ২৯ শতাংশ মানুষ সিবিআই তদন্তের বিরুদ্ধে। ২২ শতাংশ মানুষ বলেছেন তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না।
সমীক্ষা অনুযায়ী, সেদিনের ওই ঘটনায় ৪৪ শতাংশ মানুষ বলছেন তৃণমূলের লাভ হবে। আরেকদিকে ৩৪ শতাংশ মানুষ বলছেন বিজেপির লাভ হবে, এবং ১২ শতাংশ মানুষ জানাচ্ছে ঘটনায় বাম-কংগ্রেস আর ISF জোটের লাভ হবে। ১০ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন তাঁরা কিছু বলতে পারবেন না।
তবে জনতাই ঠিক করবেন সেদিনের ঘটনায় কার লাভ হবে? আর জনতার নির্ণয় জানার জন্য আমাদের ২ মে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।