বাংলা হান্ট ডেস্কঃ উত্তরবঙ্গের ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর ক্ষতিগ্রস্থদের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্য সরকার।সীমিত ক্ষমতার মধ্যেই দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সরকার। ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে সরাসরি নিয়োজিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় অক্লান্ত পরিদর্শন চালাচ্ছেন। বুধবার দার্জিলিংয়ের লালকুঠিতে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য ত্রাণ তহবিলে নিজেই ৫ লক্ষ টাকা দান করেছেন। এই অর্থ তিনি তাঁর লেখা বইয়ের রয়্যালটি ও গানের সিডি থেকে সরবরাহ করবেন বলে জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) আরও জানিয়েছেন যে, রাজ্যের ৪৪ জন মন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে ১ লক্ষ টাকা করে দান করছেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন রাজ্যবাসীর কাছেও ত্রাণ তহবিলে অর্থ দানের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। ইতিমধ্যেই ক্যামেলিয়া গ্রুপের কর্ণধার নীলরতন দত্ত ১০ লক্ষ টাকা দান করেছেন।
উল্লেখ্য, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও সাহায্য করেছেন। তিনি ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ টাকার দান করেছেন বলে খবর সূত্রের। শুধু অর্থ সহায়তাই নয়, রাজ্যের সাধারণ মানুষকেও তিনি আহ্বান জানিয়েছেন এই কঠিন মুহূর্তে পাশে থাকার। এর জন্য এক্স-এ অভিষেক লিখেছেন, ‘অপ্রত্যাশিত বন্যা ও ভূমিধসে উত্তরবঙ্গের জনজীবন বিপর্যস্ত। অসংখ্য মানুষ জীবন, জীবিকা ও সম্পত্তি হারিয়েছেন। রাজ্য সরকারের এই তহবিলে অনুদান দিলে তাৎক্ষণিক উদ্ধার, ত্রাণ ও দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসনে বড় সহায়তা হবে। আমি তহবিলে এক লক্ষ টাকা দান করেছি।’
বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, “বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আমাকে জানিয়েছেন যে রাজ্যের মন্ত্রীরাও ওই তহবিলে অর্থ দিতে চান। আমাদের ৪৪ জন মন্ত্রী ১ লক্ষ টাকা করে দেবেন।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিপর্যয়ে ৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ২১ জন দার্জিলিং, ৯ জন নাগরাকাটার এবং ২ জন মাথাভাঙায়। বিপর্যয়ের আগে প্রশাসন ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছিল।
বিরোধীদেরও সমালোচনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “সমালোচনা করলেই হবে না, মানুষের পাশে দাঁড়াতে হয়। লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ত্রাণ কাজ চলছে এবং আরও চলবে। বিধ্বস্ত এলাকাগুলির দ্রুত পুনর্গঠন হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয়েছে এবং পরিবারগুলিকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। আহতদেরও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া তিনি জানান, অতিবর্ষণে কলকাতার ১০ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার দুজনের পরিবারের হাতে চাকরির কাগজপত্র আগামীকাল শুক্রবার দেওয়া হবে। পাশাপাশি বেঙ্গালুরুতে মারা যাওয়া সাতজন বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকের পরিবারকেও চাকরি প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুনঃ দুর্গাপুজোর মতো এবার কালীপুজোতেও হবে কার্নিভাল? বৈঠকে বিশেষ বার্তা দিলেন নগরপাল মনোজ বর্মা
উত্তরবঙ্গ বিপর্যয় কেন্দ্রের ভূমিকা টেনে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে একটি পয়সাও পাইনি। তবু মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। মানুষের ভালোবাসা পেলে সব সম্ভব।” এই বার্তায় রাজ্য সরকার বোঝাতে চেয়েছে যে, রাজ্য সরকারই বিপর্যয়ে এই মুহূর্তে প্রধান ভূমিকা পালন করছে।













