বাংলাহান্ট ডেস্ক : আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার জনসাধারণের জন্য খোলা হবে না পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দরজা। মূলত ‘বানাকা লাগি’ অর্থাৎ বিগ্রহের শৃঙ্গার আচার অনুষ্ঠানের জন্যই ভক্ত সমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, চার ঘন্টার জন্য গর্ভগৃহ বন্ধ করে রাখা হবে। এদিকে সেদিনকেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) জগন্নাথ ধামে পুজো দেওয়ার কথা ছিল। ফলে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর পুজো দেওয়ার আগেই মন্দিরের দরজা বন্ধ রাখার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে।
সূত্রের খবর, বুধবার ‘বানাকা লাগি’ রীতি পালনের উদ্দেশ্যেই বিকেল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভক্তরা মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। জগন্নাথ মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, যেহেতু বুধবার প্রতিপদ পড়েছে তাই সেদিনকেই ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার শৃঙ্গার করা হবে। সাধারণত, চৈত্র মাসের প্রতিপদের দিন এই ‘বানাকা লাগি’ রীতি পুরীর মন্দিরে পালিত হয়। আর সেই কারণেই জগন্নাথধামের দরজা চার ঘন্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বছরে সাত থেকে আটবার ওড়িশার ঐতিহ্যবাহী পুরীর (Puri) জগন্নাথ মন্দিরে (Jagannath Mandir) এই রীতি পালন করা হয়। ‘বানাকা লাগি’ রীতি অনুযায়ী, নতুন রূপে সাজিয়ে তোলা হয় ভগবান জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রাকে। ভগবানের মূর্তিতে শৃঙ্গারের দায়িত্বে থাকেন বিশেষ কয়েকজন সেবায়েত। ১২ শতাব্দীর মূর্তিগুলিকে চার ঘণ্টা ধরে শৃঙ্গার করেন দত্ত মহাপাত্র বর্ণের সেবায়েতরা। সেই সেবায়েতরাই কেবলমাত্র গর্ভগৃহে প্রবেশ করার অনুমতি পান।
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবারই ভুবনেশ্বর পৌঁছে গিয়েছেন। বুধবার বিকেলে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে তার পুজো দেওয়ার কথা আছে। ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরে নেমে মমতা জানান, “এটা আমার ব্যক্তিগত সফর। বাংলার মানুষের জন্য পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে পুজো দেব। আমি যখনই পুরীতে আসি জগন্নাথ মন্দির দর্শনে যাই। এবারও যাব।” অন্যদিকে, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গেও তার দেখা করার কথা রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাকে নবীনজি বহুবার বলেছেন সাক্ষাতের জন্য। আমি তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাব। এখানে বিরোধী জোটের বৈঠকের কোনও বিষয় নয়।”
সাধারণত, ওড়িশায় কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজে গেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সময়ই একবার করে হলেও জগন্নাথ ধামে ঘুরে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু, ২০১৭ সালে সেবায়েতদের একাংশের বিরুদ্ধে মমতাকে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। তাই নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল দেশজুড়ে। তবে এবার মন্দিরের গর্ভগৃহ বন্ধ হওয়ার আগেই তিনি দর্শনে যান কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।