“আপনাদের আশীর্বাদে আবার যদি ফিরে আসি…”, কেন এমন বললেন মমতা?

Published on:

Published on:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত টানা বৃষ্টি শহরকে কার্যত জলমগ্ন করে দিয়েছিল। এই ফাঁড়া কাটিয়ে ধীরে ধীরে শহর তার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে এসেছে। তবে এখনও শহরের কিছু জায়গায় জল জমে রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আজকের মধ্যে সেগুলিও নেমে যাবে।

জল জমার এই দুর্ভোগের জন্য বিরোধীরা দায় চাপিয়ে দিয়েছেন রাজ্য সরকারের ওপর। সিপিএম হোক বা বিজেপি, কেউই দমে নেই। সুযোগ পেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের (Firhad Hakim) নাম উল্লেখ করে তোপ দেগেছে বিরোধীরা।

‘আবার ফিরে এলে কি করতে পারি দেখিয়ে দেব’, বার্তা মমতা (Mamata Banerjee)

বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউ আলিপুর সুরুচি সংঘ ক্লাবে পুজো উদ্বোধনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বিরোধীদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “যদি আবার ফিরে আসতে পারি, কী করতে পারি দেখিয়ে দেব।” এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যখন অরূপ বিশ্বাসের ক্লাবের ফিতে কেটে দেবীর পায়ে ফুল ছড়িয়ে মাইক হাতে নেন, তখনই তিনি বলেন, “তোমরা যেন নিজেরাই আয়নায় নিজেদের মুখ দেখো। অন্যকে নিয়ে সমালোচনা করার আগে নিজের দায়িত্ব বুঝতে হবে। বাংলা মানুষের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব। তোমরা আমাদের জলে ভাসাও, আর আমরা জল তাড়াই। সাড়ে পাঁচ লক্ষ পুকুর খুঁড়েছি বাংলায়। তাই জল বের করতে পারি।”

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আগামী দিনে যদি ড্রেজিং না করি, এবং আমি আপনাদের আশীর্বাদে আবার ফিরে আসি, দেখাবো কী করা যায়। ওরা কিছু না করলে বিকল্প কী করা যায়, দেখিয়ে দেব। আমাদের দিকে জল ঠেললে আমিও ওদের দিকে জল ঠেলে দেব। প্রত্যেক বছর এক জিনিস।”

শহরে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা

বুধবার থেকে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরতে শুরু করেছে কলকাতা। বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার বেশিরভাগ রাস্তাই জলমুক্ত ছিল। তবে কলকাতা পুরসভা (KMC) জানিয়েছে, শহরের কিছু অংশে এখনও জল জমে রয়েছে। পুরসভার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আমহার্স্ট স্ট্রিট, সুকিয়া স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া এলাকা ইতিমধ্যেই স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ইএম বাইপাস সংলগ্ন এলাকা, জোকা, সরশুনার কিছু অংশ ও মেটিয়াবুরুজের একাংশে এখনও জল জমে রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আরও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেখানেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।

প্রসঙ্গত, সোম ও মঙ্গলবার মিলিয়ে শহরে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সোমবার রাতের কয়েক ঘণ্টা সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল। মঙ্গলবার দুপুরের পর ভারী বৃষ্টি থামতেই অনেক জায়গা থেকে জল নামতে শুরু করে। কিন্তু বালিগঞ্জ, পার্কসার্কাস, তপসিয়া, ঠনঠনিয়া, কেশবচন্দ্র সেন স্ট্রিট ও শেক্সপিয়র সরণির মতো এলাকায় জল জমেছিল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় জল নেমেছে অনেকটাই।

Mamata Banerjee vows action as Kolkata recovers from heavy rain deaths

আরও পড়ুনঃ বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনায় ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ, CESC-কে দায়িত্ব নিতে ‘বাধ্য’ করলেন মমতা?

বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্টে মামলা

জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। আদালত রাজ্য সরকার, কলকাতা পুরসভা এবং CESC-এর কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে। পুরসভাকে নিকাশি ব্যবস্থার রিপোর্ট দিতে হবে এবং বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাকে জানাতে হবে দুর্ঘটনা এড়াতে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ নভেম্বর।