বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ইয়াসের তাণ্ডবে রীতিমতো লন্ডভন্ড ওড়িশা এবং বাংলা। গত তিনদিনে একদিকে যেমন বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে দুই ২৪ পরগনা এবং মেদিনীপুর। তেমনি ওড়িশারও একাধিক এলাকায় অবস্থা ছিল তথৈবচ। নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুটা আগেই ল্যান্ডফল করে ইয়াস। যার জেরে একদিকে যেমন বেড়েছে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস, তেমনি ভেঙে পড়েছে একাধিক নদী বাঁধ। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন প্রায় ১ কোটি মানুষ। ভেঙেছে তিন লক্ষ বাড়িঘর। যদিও ১৫ লক্ষ মানুষকে সঠিক সময়ে সরিয়ে নিতে পেরেছিল প্রশাসন।
একি অবস্থা ওড়িশাতেও। ইয়াসের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১২৮ টি গ্রাম। বালেশ্বর কেন্দ্রাপাড়া, পারাদ্বীপ, ময়ূরভঞ্জ, প্রভৃতি এলাকায় সামুদ্রিক জলোচ্ছাস ছিল রীতিমতো আতঙ্কজনক। পশ্চিমবঙ্গের মতোই ওড়িশাতেও জারি ছিল লাল সর্তকতা। মানুষজনকে ঘর থেকে বেরোতে কড়া নিষেধ করা হয়েছিল প্রশাসনের তরফে। কিন্তু নিষেধ অমান্য করাও হতো মানুষেরই ধর্মের মধ্যে পড়ে। আর সেই ছবি ধরা পড়ল ওড়িশা থেকে পাওয়া একটি ভাইরাল ভিডিওতে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবের লেটেস্ট আপডেট মানুষকে পৌঁছে দিতে তৎপর হয়ে কাজ করছিলেন বিভিন্ন সাংবাদিক। এরই মাঝে হঠাৎ তারা দেখেন, এক ব্যক্তি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করেই বেরিয়ে পড়েছেন রাস্তায়। স্বাভাবিকভাবেই তার দিকে ওঠে প্রশ্নবাণ। এত দুর্যোগের মধ্যে আপনি রাস্তায় বেরিয়েছেন কেন, জিজ্ঞেস করাতে ওই ব্যক্তি বলেন,”আপনারা রাস্তায় বলেই আমি রাস্তায়।” সাংবাদিক বলেন “আমরা তো খবর সম্প্রচার করছি!” প্রশ্নের উত্তরে ব্যক্তির জবাব, “এইজন্যই তো আমিও বেরিয়েছি। না হলে আপনারা খবর পাবেন কিভাবে? কার সঙ্গে কথা বলবেন।”
https://twitter.com/arunbothra/status/1397495388588806147?s=19
এই ইন্টারভিউটি এখন রীতিমতো ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঝড়ের মধ্যে অনেক অসচেতনতার ছবি ইতিমধ্যেই চোখে পড়েছে। এমনও দেখা গিয়েছে এগিয়ে আসছে সমুদ্রের ঢেউ। আর জলে অর্ধেক ডুবে থাকা এক দোলনায় আপন-মনে দুলে চলেছেন এক যুবক। ঝড় এবং তুফান সম্পর্কে যেন তার কোনও হুঁশই নেই। অন্যদিকে আবার বেশ কিছু ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের তোলার ফেক ভিডিওর আসল সত্যিও সামনে এনেছেন অনেক গ্রামবাসী। দুর্যোগ কত ভয়াবহ তা দেখাতে জলে নেমে ভিডিও শুট করেছিলেন এক সাংবাদিক। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল পরিস্থিতি এতই খারাপ তার গায়ে ব্যাং উঠে যাচ্ছে, তবু তিনি খবর পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। এই ভিডিওটিরও আসল সত্যি প্রকাশ করেন গ্রামবাসীরাই। দেখা যায় সাংবাদিক ইচ্ছে করেই জলে নেমে ছিলেন, বাকি অঞ্চল সেভাবে জলে ডুবে নেই। দুর্যোগে একদিকে যখন রীতিমতো আতঙ্কের দিন গুনছে সকলে। তখন এমন কিছু ভাইরাল ভিডিও হয়তোবা কিছুক্ষণের জন্য মুখে হাসি এনে দিলেও দিতে পারে। তবে অসচেতনতার কোন জায়গা নেই এমন দুর্যোগের দিনে।