বাংলাহান্ট ডেস্ক : সোশ্যাল মিডিয়া থেকে রাজ্য রাজনীতির অলিন্দ, সব জায়গাতেই স্পষ্টবক্তা হিসেবে বেশ পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন এই প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক। একেবারে সাধারণ জীবন যাপন করেন তিনি। নাম মনোরঞ্জন ব্যাপারি (Manoranjan Byapari)। তবে, মাঝেমধ্যেই তাঁর ফেসবুকের দু’একটও পোস্ট বেশ খানিকটা বিতর্কের ঝড় তোলে। মাঝে মাঝে সেই পোস্টগুলি আবার তাঁর দল তৃণমূলের (TMC) জন্যও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাঝে মধ্যেই আবার বিরোধীদের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন তিনি। কিছুদিন আগেই বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের পুরস্কারের লোভ দেখিয়ে তাঁকে বিজেপি-তে যোগ দিতে বলা হয়ে বলে অভিযোগ তোলেন বলাগড়ের এই তৃণমূল বিধায়ক। এবার সেই মনোরঞ্জন ব্যাপারিই মুখ খুললেন বিধায়ক কোটার ত্রিপল ও কাপড় বণ্টনের তীব্র অব্যবস্থা নিয়ে।
ইতিমধ্যেই বেশ কিছু জায়গায় অভিযোগ উঠেছে সরকারি খাতের ত্রিপল ও অন্যান্য ত্রাণ সামগ্রী থেকে শুরু করে পুজোর আগে সরকারি উদ্যোগে জামা কাপড় বণ্টনের অব্যবস্থা নিয়ে। অভিযোগের তির অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয় নেতা কর্মীদের দিকে। সেই কথা কার্যত উল্লেখ করেই আজ ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারি।
তিনি তাঁর ফেসবুকে লেখেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের মা মাটি মানুষের সরকার গত বছর দুর্গা পূজার সময়ে দরিদ্র দুঃস্থ মানুষদের জন্য কিছু শাড়ি কাপড় দিয়েছিল। বর্ষার সময়ে দিয়েছিল বিতরনের জন্য কিছু ত্রিপল। আমি সে গুলো ১৭টা পঞ্চায়েতে ভাগ করে দিয়েছিলাম বিতরনের জন্য। হয়ত তারা সে গুলো নিয়মমত বিতরন করে থাকবেন। তবে আমার যেটা আক্ষেপ ছিল – কোন মানুষ আমাকে এসে বলেনি যে হ্যাঁ আমি বিধায়ক কোটার কাপড় ত্রিপল পেয়েছি- আপনাকে ধন্যবাদ। যা শুনলে আমি আনন্দ পেতাম। বরং অনেকে উল্টে দোষারোপ করেছে , অমুকের পাকা দালান, সে তমুক নেতার আত্মীয় বলে সব পেয়েছে । আমি কিছু পাইনি।’
মনোরঞ্জনবাবু আরও লেখেন, ‘এই পরিস্থিতিতে আমি আর কোনও নেতার কাছে কোনও জিনিস দিইনি। সব জমা করে রেখেছিলাম বিধায়ক কার্যালয়েই। নেতাদের বলেছিলাম- যার ত্রিপল কাপড় দরকার বলে আপনার মনে হবে একটা স্লিপ লিখে আমার কাছে পাঠিয়ে দেবেন । আমি নিজের হাতে তাকে সে সব দেব। তবে – কেউ গলায় সোনার চেন হাতে সোনার আংটি পড়ে এসে বলবে আমার একটা ত্রিপল চাই ! সে তিনি যেই হোন আমি কিন্তু তাকে খালি হাতে ফিরিয়ে দেব।’
মনোরঞ্জনবাবু আরও জানান, এইভাবে স্লিপ লিখে দিতে অনেক নেতাই সময় পাননি। তাই তাঁর কাছে প্রচুর সরকারি জিনিস জমা হয়ে রয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এবার আবার পুজো আসছে। গোডাউন খালি করতে হবে। তাই তিনি এখন গ্রামে গ্রামে ঘুরে অভাবী দুঃস্থ মানুষদের কাপড়-ত্রিপল পৌঁছে দেবার কাজ করছেন। সবশেষে তৃণমূল বিধায়ক যোগ করেন, ‘জানি, আমার অনেক কাজ ঠিক বিধায়কের উপযুক্ত কাজ নয়। তা হোক, তবু আমি এটাই করব। কারণ কাজটা খুবই জরুরি।’