ভারতে ঘুরতে এসে লকডাউনে আটকে পড়েছিলেন এক স্প্যানিশ যুবক। আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ থাকায় ফিরতে পারেন নি মা বাবার কাছে। ৬ মাস ছিলেন গ্রামেরই একজন হয়ে। ভাষা সমস্যা সত্ত্বেও আপন করে নিয়েছিল সকলে। সেই অতিথি ফিরে যাওয়ার সময় কান্নায় ভেঙে পড়ল গোটা গ্রাম।
দিন সাতেকের জন্য আসামের এক গ্রামে ঘুরতে এসেছিলেন স্পেনের যুবক ম্যানুয়েল আরিবাস রডরিগেস। কিন্তু বিধি বাম, ভারত সরকারের হঠাৎ করেই ডাকা লকডাউনে আটকে পড়লেন সেখানেই। ৬ মাস পরে ম্যানুয়েল যখন ফেরার গাড়ি ধরলেন তখন সে যেন আর বিদেশী নয়। গ্রামেরই এক যুবক। তাকে বিদায় জানাতে গিয়ে চোখ ছলছল গোটা গ্রামের।
আসামের শিবসাগরের বকতা বকতিয়াল গ্রামের সকলের নয়নের মনি হয়ে উঠেছিলেন ম্যানুয়েল। কখনো গীটার বাজিয়ে গান ধরেছেন, কখনো বা দেখা গেছে শিক্ষকের ভূমিকায়, মাঠে নেমে সব্জিও ফলিয়েছেন ম্যানুয়েল। সদা হাস্যমুখ যুবককে বসে থাকতে দেখে নি কেউ।
গত বছর স্পেন থেকে দেশভ্রমণের উদ্দেশ্যে জাপানে আসেন ম্যানুয়েল। সেখান থেকে কোরিয়া, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম, তাইল্যান্ড, মায়ানমার হয়ে ২৭ জানুয়ারি আসেন মনিপুরে। সেখান থেকে আসাম। আসামে গড়গাঁও গ্রামে যুব উৎসবে তাঁর আলাপ হয় কলেজ ছাত্র বিশ্বজিৎ বরবরুয়ার সঙ্গে।
বিশ্বজিতের সাথে তাঁদের গ্রাম ঘুরতে আসেন ম্যানুয়েল। ঠিক ছিল সপ্তাহখানেক থাকবেন। কিন্তু সেই এক সপ্তাহের অতিথি যখন ৬ মাস পরে ফিরছেন তখন দেশ, ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতির গন্ডি ভেঙে গিয়েছে। বিদায় বেলায় তাই ম্যানুয়েলের কথায়, বাড়ি থেকে ১০ হাজার কিলোমিটার দূরে এই বিশাল পরিবারের কথা লকডাউন না হলে তিনি জানতেই পারতেন না।