বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘টাকার বিনিময়ে বাংলায় নাকি বাংলাদেশিরাও চাকরি পেয়েছেন’, গতকাল উত্তর ২৪ পরগনা (North 24 Pargana) জেলার বনগাঁ (Bangaon) বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে যোগদান করে তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) বিরুদ্ধে এহেন গুরুতর অভিযোগ আনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। একইসঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন সিবিআই (CBI) কর্তা উপেন বিশ্বাসের (Upen Biswas) কাল্পনিক চরিত্র ‘রঞ্জন’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিখ্যাত রঞ্জন। চাটাই আর মাদুর পেতে কয়েকশো কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। এমনকি বাংলাদেশের (Bangladesh) লোককেও চাকরি দিয়েছেন।”
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে প্রাথমিক টেট থেকে স্কুল সার্ভিস কমিশনসহ অন্যান্য একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তোলপাড় বাংলা। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্য, অশোক সাহা, সুবীরেশ ভট্টাচার্যরা হেফাজতে। এই পরিস্থিতিতে একের পর এক নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সামনে এসে চলেছে।
সম্প্রতি, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস এক কাল্পনিক চরিত্র ‘রঞ্জন’-এর নাম প্রকাশ্যে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে জানা যায়, সেই রঞ্জন আসলে বাগদার বাসিন্দা চন্দন মণ্ডল, যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ সামনে আসতেই তার বাড়িতে হানা দেয় ইডি এবং সিবিআই-এর মতো তদন্তকারী সংস্থাগুলি।
গতকাল উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সেই বিষয়ে মন্তব্য প্রকাশ করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন,”বনগাঁ-বাগদা বিখ্যাত হয়ে গিয়েছে। বিখ্যাত রঞ্জন। এখানে নাকি টাকা তোলার মেশিন পর্যন্ত রয়েছে।” একই সঙ্গে সম্প্রতি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার বিশ্বজিৎ দাস প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “বিজেপি বিধায়ক আবার তৃণমূলের জেলা সভাপতি। সার্কাস আর চিড়িয়াখানাতেও এ দৃশ্য চোখে পড়ে না।” ২০২৪ সালের লোকসভা ও বিধানসভা ভোট একসঙ্গে হবে বলেও জানান শুভেন্দু।
যদিও এই বিষয়ে বিশ্বজিৎ দাস শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে বলেন, “ওর বাবা (শিশির অধিকারী) তৃণমূলের হয়ে সাংসদ পদে জয় লাভ করল। এখন কোথায় আছে, সেটা আগে জানা উচিত শুভেন্দুর।”
প্রসঙ্গত,ভিনিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় এদিন তৃণমূল কংগ্রেসকে বিঁধে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, “স্কুল এবং মাদ্রাসার শিক্ষকের চাকরি সব লুট হয়েছে। একের পর এক দুর্নীতি। তদন্ত চালিয়ে গেলে অনেক মানিক ধরা পড়বে। সকলকে বের করে আনতে হবে।”
যদিও বিজেপি ও সিপিএমের আক্রমণের বিরুদ্ধে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, “শুভেন্দু যখন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল, তখন কেন এই সকল মন্তব্য করেনি? ওর সুপারিশে কতগুলি চাকরিতে দুর্নীতি হয়েছে, তার তদন্ত করা প্রয়োজন।” সিপিএমের উদ্দেশ্যে কুণালের দাবি, “অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য বিজেপির পিছু নিয়েছে বামেরা।”