‘একটাকাও ক্ষতিপূরণ পাইনি’! গার্ডেনরিচে মরদেহ নিয়ে চলছে ‘টাকার খেলা’? হাহাকার নিহতদের পরিবারের

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শহরে কাজে এসে যে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হবে তা হয়তো কল্পনাও করেননি! রবিবার রাতে আচমকাই ভেঙে পড়ে গার্ডেনরিচের একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের একাংশ (Garden Reach Building Collapse)। সেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান হুগলির খানাকুলের আবদুল্লা এবং মুর্শিদাবাদের রাধাকান্তপুরের নাসিমউদ্দিন শেখ। গার্ডেনরিচের ‘অভিশপ্ত’ বহুতলে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে এলেও আর বাড়ি ফেরা হল না তাঁদের!

নিত্যদিন কাজের খোঁজে গ্রাম থেকে শহরে আসে বহু মানুষ। সপ্তাহ তিনেক আগে গার্ডেনরিচের (Garden Reach) বহুতলের কাজে রাজমিস্ত্রি হিসেবে যোগ দেন আবদুল্লা। রবিবার আচমকাই পরিবারের কাছে খবর যায় সে আর নেই! নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। নাতিকে হারিয়ে হাহাকার আবদুল্লার দিদিমা মাসুদা বেগমের। আমার কোল খালি হয়ে গেল, বলেন তিনি।

অপরদিকে আবদুল্লার প্রতিবেশী আজিজুল শেখ এক সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, খুবই গরিব পরিবারের ছেলে আবদুল্লা। রাজমিস্ত্রির কাজে কলকাতায় (Kolkata) এসেছিলেন। সেই বহুতলের ধ্বংসাবশেষের নীচে চাপা পড়েই মৃত্যু হয় তাঁর।

আরও পড়ুনঃ ‘আমার ভুল ছিল’, ভোটের আগে বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি শুভেন্দুর, ভরা সভায় যা বললেন…

প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদের রাধাকান্তপুরের নাসিমউদ্দিন শেখের পরিবারও। আবদুল্লার মতো নাসিমউদ্দিনও গার্ডেনরিচের ভেঙে পড়া বহুতলে রাজমিস্ত্রির কাজ করছিলেন। গত রবিবারের দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে তাঁর। স্বামীর মৃত্যুর খবরে ভেঙে পড়েছে নাসিমউদ্দিনের গর্ভবতী স্ত্রী। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে।

নাসিমউদ্দিনের বাবা সংবাদমাধ্যমের কাছে জানান, ছেলের মৃতদেহ কলকাতা থেকে গ্রামে ফেরানোর জন্য ১৪,০০০ টাকা ধার করেছেন তিনি। ময়নাতদন্তের ঘর, ডাক্তারখানা সহ আরও এক জায়গায় তাঁর থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। নাসিমউদ্দিনের বাবা বলেন, ‘ময়নাতদন্তের ঘরে নিয়েছে, ডাক্তারখানায় ১০০ টাকা নিয়েছে। আরও এক জায়গায় ১০০, এইভাবে নিয়েছে। আমরা এক টাকাও ক্ষতিপূরণ পাইনি’।

garden reach building collapse

অকালে ছেলেকে হারিয়ে ভেঙে পড়েছেন নাসিমউদ্দিনের মা। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি করেছেন নাসিরা বিবি। ছেলের মৃত্যুর পর ৪ শিশু, যুবতী বৌমাকে নিয়ে কীভাবে সংসার চালাবেন সেই চিন্তায় পড়েছেন তিনি। নাসিরা বিবি বলেন, ‘ওই বহুতলের জন্য আমার ছেলের মৃত্যু হল। আমি তো শাস্তি চাইবই’।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর