বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাত পোহালেই লোকসভা ভোট। তার আগে বিজেপি কর্মীর খুনের ঘটনা অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নন্দীগ্রামে (Nandigram)। গেরুয়া শিবিরের কর্মী রথিবালা আড়িকে পিটিয়ে, কুপিয়ে খুনের অভিযোগ এনে ২৫ জনের নামে FIR দায়ের করেছেন তাঁর মেয়ে মঞ্জু। সেখানে তৃণমূলের (TMC) বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতার নাম রয়েছে। শেখ সুফিয়ান, নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তথা ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি শেখ আল্লারাজি সহ জোড়াফুল শিবিরের বেশ কয়েকজন নেতার নাম রয়েছে সেই তালিকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, বুধবার রাতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল সোনাচূড়া, গড়চক্রবেড়িয়া এলাকা। স্থানীয় তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা দেবু রায়ের নেতৃত্বে মনসাবাজায় এলাকায় হামলা চালানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই হামলার ঘটনাতেই বিজেপি (BJP) কর্মী রথিবালাদেবী প্রাণ হারান বলে দাবি। এই হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত খোকন সীট। এছাড়া দেবু রায়, শেখ আল্লারাজি, শেখ সুফিয়ানের নামও জড়িয়েছে এই খুনের মামলায়।
এদিকে রথিবালাদেবীর খুনে অভিযুক্ত দেবু, খোকন দু’জনেই সোনাচূড়া বাসিন্দা। জমি আন্দোলনের সময় তাঁদের উত্থান। বাম কর্মী-সমর্থকদের বাড়িছাড়া করা, তাঁদের জমি দখল করা থেকে শুরু করে জরিমানা আদায়, একাধিক অভিযোগ রয়েছে এনাদের বিরুদ্ধে। এরপর শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর স্থানীয় তৃণমূলে দু’জনের প্রভাব ক্রমেই বাড়তে থাকে।
আরও পড়ুনঃ রাত পোহালেই ভোট, তার আগে বোমা উদ্ধার! এগরায় শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে যা ঘটল … তোলপাড়!
দলের একাংশ জানাচ্ছে, এদিন থেকেই এলাকাছাড়া দেবুরা। যদিও তৃণমূল নেতার যদিও দাবি, তাঁকে খুনের মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। দেবু বলেন, ‘বুধবার রাতে পলাশ ভুঁইয়া নামের আমাদের একজন কর্মীর টোটো ভাঙচুর করে দেয় বিজেপির লোকজন। দু’টো বাড়িও ভেঙে ফেলা হয়। সেই সময় আমরা ২৮৪ নম্বর বুথে পাহাড়া দিচ্ছিলাম। পুলিশকে জানানো হয়। প্রায় ২০ মিনিট পর পুলিশ এসে জানায়, একজন মহিলা বিজেপি কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন’। তৃণমূল করেন বলে তাঁকে এই খুনের মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
আর এক অভিযুক্ত শেখ আল্লারাজি আবার বলেন, সাউথখালি তাঁর বাড়ি থেকে ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। সেই এলাকায় তাঁদের জাতায়াত নেই। তৃণমূল নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করলেও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘খোকন সীট, দেবু রায়েরা গড়চক্রবেড়িয়া থেকে লোক নিয়ে গিয়ে খুন করিয়েছে। FIR দায়েরের পরেও অভিযুক্ত আল্লারাজি নন্দীগ্রাম থানায় গিয়ে আইসির সঙ্গে বৈঠক করেছেন’।
সব মিলিয়ে, বিজেপি কর্মীর খুনে তেতে রয়েছে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের অধীন নন্দীগ্রাম। রাত পোহালেই আবার ওই কেন্দ্রে ভোট। তার আগে বেশ কিছু স্থানীয় তৃণমূল নেতা এলাকাছাড়া বলে খবর। এর ফলে আগামীকাল তথা নির্বাচনের দিন সাংগঠনিকভাবে জোড়াফুল শিবির খানিক চাপে পড়তে পারে বলে অনুমান করছে ওয়াকিবহাল মহল।