বাংলাহান্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের (Pakistan) পাঞ্জাব প্রদেশে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ফয়জলাবাদ জেলা। শুক্রবার সকালে মালিকপুর এলাকার একটি রাসায়নিক ও আঠা তৈরির কারখানায় বিষাক্ত গ্যাস লিকের ফলে ঘটে ভয়ানক বিস্ফোরণ। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৯ জন শ্রমিক। আহত হয়েছেন আরও ৭ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু মানুষ চাপা পড়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
পাকিস্তানে (Pakistan) গ্যাস লিক করে ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত ১৯
পাকিস্তানের (Pakistan) স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল থেকেই কারখানার ভিতরে বিষাক্ত গ্যাস লিক হচ্ছিল। কর্মীরা পরিস্থিতি বোঝার আগেই প্রবল শব্দে ফেটে যায় কারখানার একটি বয়লার। বিস্ফোরণের অভিঘাত এতটাই তীব্র ছিল যে পুরো কারখানার একটি বড় অংশ মুহূর্তে ধসে পড়ে। আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের বিল্ডিংয়েও। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিস্ফোরণের আগুনে দুইটি ভবনই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।
আরও পড়ুন:এবার সহজেই তৈরি হবে বাচ্চাদের আধার কার্ড! দুর্দান্ত উপায় চালু সরকারের, হবে না খরচও
পাকিস্তানের (Pakistan) ফয়জলাবাদের ডেপুটি কমিশনার রাজা জাহাঙ্গির আনোয়ার জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়েই দ্রুত উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। আগুন নেভানোর পর ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে শুরু হয় উদ্ধারকাজ। এখন পর্যন্ত ১৫ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আনোয়ার বলেন, “ধ্বংসস্তূপে এখনও মানুষ আটকে থাকতে পারেন। তাই সময়ের সঙ্গে লড়াই করে চলছে উদ্ধার অভিযান। জেলায় সব জরুরি পরিষেবা তৎপর রয়েছে।” পাঞ্জাব পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল উসমান আনোয়ার জানান, দমকল, উদ্ধারকারী দল ও অন্যান্য এজেন্সিগুলিকে সতর্ক করে ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “যে কোনও মানুষ জীবিত রয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতিটি ইঞ্চি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
দুর্ঘটনার পর শোক প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের (Pakistan) পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মারিয়ম নওয়াজ। তিনি নিহত শ্রমিকদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কীভাবে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে সরকার ইতিমধ্যে ৫ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল গঠন করেছে। দলটি কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বয়লারের রক্ষণাবেক্ষণ এবং গ্যাস লিকের সম্ভাব্য কারণগুলি বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা করবে।

এদিকে পাকিস্তানের (Pakistan) ন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন গোটা ঘটনায় প্রশাসন ও কারখানা কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় তুলেছে। তাদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও শ্রমিক সুরক্ষার নিয়ম না মেনেই দীর্ঘদিন ধরে কারখানাটি চালানো হচ্ছিল। যথাযথ নজরদারি ও নিয়ম মেনে চললে এই বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হতো বলে দাবি ইউনিয়নের। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা এবং প্রাণহানির সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। উদ্ধারকাজ অব্যাহত রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।












