বাংলা হান্ট ডেস্কঃ চাকরি দুর্নীতি মামলায় ক্রমশ অস্বস্তি বেড়ে চলেছে প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের। এসএসসি (SSC) দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ-অর্পিতা। বিগত ১২ দিন ইডি (ED) হেফাজতে থাকার পর আদালতের নির্দেশে বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে (Presidency Jail) সাধারণ কয়েদিদের মতো দিন কাটছে তাদের আর এর মাঝেই অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে এ মামলায় পার্থ এবং অর্পিতা দুজনকেই নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করে দিলো সিবিআই (CBI)। এসএসসি এবং প্রাথমিক টেট দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতাকে জেরা করতে চলেছে তারা।
সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় তদন্ত বহুদূর এগিয়েছে এবং এবার সেই তদন্তের সূত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতাকে হেফাজতে নিয়ে জেরার প্রস্তুতি শুরু করেছে সিবিআই। এক্ষেত্রে ইডির সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস মহাসচিব এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রীকে হেফাজতে নেওয়া হবে বলে খবর।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার তদন্তভার প্রথমে দেওয়া হয় সিবিআই-এর হাতে। এক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করে তারা। পরবর্তীতে একাধিক শিক্ষা আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও সিবিআই জেরার মুখে পড়তে হয়। এর পরেই এই মামলায় অন্তর্ভুক্তি ঘটে ইডির এবং অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ এবং সোনা গয়না পাওয়ার পর তাদেরকে নিজেদের হেফাজতে নেয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা আর এবার পুনরায় একবার এ মামলায় অন্তর্ভুক্তি ঘটতে চলেছে সিবিআইয়ের।
তবে এক্ষেত্রে ইডি হেফাজতে থাকার পর পুনরায় কি একবার সিবিআই হেফাজত হতে পারে পার্থ-অর্পিতার? অতীতে অবশ্য খাস বাংলায় এহেন উদাহরণ রয়েছে। ২০১৫ সালে রোজভ্যালি দুর্নীতি মামলায় গৌতম কুণ্ডুকে সর্বপ্রথম গ্রেফতার করে ইডি। পরবর্তীতে এই মামলাটির তদন্ত শুরু করে তাকে পুনরায় গ্রেফতার করে সিবিআই। ফলে এক্ষেত্রে পার্থ ও অর্পিতাকে সিবিআই হেফাজতে নিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এক সিবিআই কর্তা জানান, “সরকারি চাকরি বিক্রি করার মাধ্যমে যেভাবে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, তার জাল অনেক গভীরে রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছি এবং পরবর্তীতে একাধিক নতুন তথ্য সামনে উঠে আসবে।”
প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশে এসএসসি ও প্রাথমিক টেট থেকে শুরু করে অন্যান্য একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইতিমধ্যে নয়টি মামলা করেছে সিবিআই। এক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত অর্থের লেনদেন বিষয়টি খতিয়ে দেখছে ইডি।বসেই প্রসঙ্গে সম্প্রতি পার্থ-অর্পিতাকে গ্রেফতার করে তারা। তবে ইতিমধ্যে দুর্নীতির মূল উৎস খুঁজে বার করতে তৎপর হয়ে উঠল সিবিআই। তাদের অনুমান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অর্পিতা ছাড়াও আরো বহু প্রভাবশালী ব্যক্তি এই দুর্নীতি মামলায় জড়িত রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তদন্ত করে আরো একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসতে পারে বলেই মনে করছেন সিবিআই অফিসাররা। সিবিআই সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বাগ কমিটির রিপোর্টে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখিত রয়েছে। তাই বর্তমানে জেল হেফাজতে থাকলেও পুনরায় একবার পার্থ ও অর্পিতাকে জেরার জন্য সিবিআই তাদের হেফাজতে নিতে চলেছে বলেই খবর সামনে উঠে আসছে।