পুরনো পোশাকই বদলাল জীবন! কয়েক কোটির ব্যবসা সামলাচ্ছেন দুই বন্ধু, চমকে দেবে মায়াঙ্ক-আয়ুষের কাহিনি

Published on:

Published on:

Mayank and Ayush's Success Story will amaze you.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: ফেলে দেওয়া জামা কাপড় দিয়েই সফলতার গল্প (Success Story) লিখলেন দুই বন্ধু। ফাস্ট ফ্যাশনের দৌড়ে প্রতিদিন পাহাড় সমান জমে যাচ্ছে পোশাকের বর্জ্য। ল্যান্ডফিল ভরে যাচ্ছে ফেলে দেওয়া জামাকাপড়ে। এই সময়েই ভারতের দুই তরুণ উদ্যোক্তা ময়ঙ্ক সিং এবং আয়ুষ সাক্সেনা এক অভিনব পথ দেখালেন। তাঁরা পুরনো জামাকাপড়, জুতো, চামড়ার ব্যাগ কিংবা ইলেকট্রনিক বর্জ্যকে কাজে লাগিয়ে গড়ে তুলেছেন এক সফল স্টার্টআপ — ‘টু-ইউজড’ (Tooused)। বর্জ্য থেকে তৈরি তাঁদের এই ব্যবসা এখন কোটি টাকার রাজস্ব এনে দিচ্ছে।

ফেলে দেওয়া জামা কাপড় দিয়েই সফলতার গল্প (Success Story) লিখলেন দুই বন্ধু

২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই সংস্থা, যার নিবন্ধিত নাম Letfly Direct Technologies Pvt. Ltd.। সংস্থার সদর দপ্তর হরিয়ানার গুরগাঁওয়ে। ময়ঙ্ক সিং বর্তমানে সংস্থার সিইও হিসেবে প্রযুক্তি ও লজিস্টিকসের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, আর আয়ুষ সাক্সেনা সিবিও হিসেবে B2B অপারেশন পরিচালনা করছেন। শুরুতে Tooused কাজ করত B2C মডেলে — অর্থাৎ সরাসরি গ্রাহকদের কাছ থেকে পুরনো জিনিস সংগ্রহ করত। ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে সংস্থাটি B2B মডেলেও পা রেখেছে, অর্থাৎ এখন ব্যবসা সংস্থাগুলির সঙ্গেও তাদের লেনদেন চলছে (Success Story)।

আরও পড়ুন:একী কাণ্ড! ভারতের একদম কাছেই ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি গড়ছে চিন, কী পরিকল্পনা বেজিংয়ের?

ব্যবহার অযোগ্য পুরনো পোশাকগুলো Tooused রিসাইকেল করে নতুন টেকসই কাপড়ে পরিণত করে। সেই কাপড় বিক্রি হচ্ছে উত্তর ভারত, পাঞ্জাব, কলকাতা, আহমেদাবাদ ও নাসিকের মতো শহরের বিভিন্ন ক্রেতার কাছে। শুধু তাই নয়, তাদের তৈরি রিসাইকেলড ফেব্রিক এখন ব্যবহার হচ্ছে কর্পোরেট অফিসের ইন্টেরিয়র ডিজাইনেও। Chaos এবং Blue Pine-এর মতো সংস্থা তাদের ক্লায়েন্ট তালিকায় আছে। এমনকি কিছু কুইক-ডেলিভারি ব্র্যান্ডও Tooused-এর সঙ্গে পার্টনারশিপ করেছে (Success Story)।

সংস্থার নিজস্ব Textile Recycling Facility (TRF) রয়েছে দিল্লির ছতরপুরে, যেখানে সংগ্রহ করা পোশাক বাছাই ও প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। গ্রাহকদের জন্য প্রক্রিয়াটি খুব সহজ — কেবল Tooused অ্যাপ ডাউনলোড করে অর্ডার দিতে হয়। এক থেকে দুই দিনের মধ্যেই গ্রাহকের দরজায় পৌঁছে যায় ২৪x২৪ ইঞ্চির একটি রিসাইকেল কার্টন। সেই বাক্সে পুরনো কাপড় ভরে ফেরত পাঠালে, লজিস্টিক পার্টনার তা সংগ্রহ করে Tooused অফিসে পাঠিয়ে দেয় (Success Story)।

Mayank and Ayush's Success Story will amaze you.

আরও পড়ুন:চন্দননগরের প্ল্যান বাতিল? কুছ পরোয়া নেই, রইল কলকাতার শতাব্দী প্রাচীন কিছু জগদ্ধাত্রী পুজোর খোঁজ

ছতরপুরের TRF সেন্টারে কর্মীরা সেই পোশাকগুলো রঙ, আকার ও মেটিরিয়ালের ভিত্তিতে আলাদা করে। প্রতিটি বাক্স সাধারণত ১৫-২০টি পোশাকে ভরা থাকে। সেগুলি প্রক্রিয়াকরণের পর গ্রাহকের Tooused ওয়ালেটে যোগ হয় ক্রেডিট পয়েন্ট, যেখানে প্রতিটি পয়েন্টের মান ১ টাকা। গড়ে এক বাক্স থেকে ৪০০-৬০০ টাকার ভাউচার পাওয়া যায়। এই পয়েন্ট দিয়ে Flipkart, Zomato, Swiggy-সহ প্রায় ২০০টি ব্র্যান্ড থেকে কেনাকাটা করা যায়। চাইলে গ্রাহক সরাসরি ইউপিআই ওয়ালেটে টাকাও তুলতে পারেন, যদিও সেক্ষেত্রে টাকার পরিমাণ কিছুটা কম হয়, কারণ পুরনো পোশাকের পুনর্বিক্রয় মূল্য তুলনামূলক কম (Success Story)।

Tooused অ্যাপে রয়েছে একটি বিশেষ CO₂ ট্র্যাকার, যা গ্রাহকদের জানায় তাঁদের রিসাইক্লিং প্রচেষ্টায় কতটা কার্বন নির্গমন কমেছে। মাত্র দুই বছরের মধ্যেই সংস্থার নজরকাড়া সাফল্য— প্রথম বছরেই রাজস্ব ছিল ৩১ লক্ষ টাকা। চলতি অর্থবছরে সেটি বেড়ে পৌঁছেছে ২.৮ কোটি টাকায়, এবং লক্ষ্য ৪.৫ কোটি টাকার রাজস্ব অর্জন করা (Success Story)। ময়ঙ্ক এবং আয়ুষের এই উদ্ভাবন প্রমাণ করেছে — টেকসই ব্যবসার ধারণা শুধু পরিবেশবান্ধবই নয়, আর্থিক দিক থেকেও হতে পারে অত্যন্ত লাভজনক।