মেঘনাদ সাহা (meghonad saha) বাংলার মাটিতে জন্মানো বিজ্ঞানের অন্যতম সেরা রত্ন। আজ ৬ই অক্টোবর এই মহান বিজ্ঞানীর জন্মদিন। ছ’বার নোবেল পুরষ্কারের মনোনয়ন পেয়েছেন কিন্তু শুধু দুর্ভাগ্যের কারনেই অধরা থেকে গেছে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পুরস্কারটি।
সালটা ১৯৩০, প্রথমবারের মত নোবেল পুরষ্কারের জন্য মনোনয়ন পেলেন মেঘনাদ সাহা। পদার্থ বিজ্ঞানে মেঘনাদের কাজকে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োগ বলে স্বীকার করলেও ‘আবিস্কার’ বলতে গররাজি ছিল নোবেল কমিটি। তাই নোবেল অধরা রইল মেঘনাদের। সেই শুরু; ১৯৩৭, ১৯৪০, ১৯৩৯, ১৯৫১ ও ১৯৫৫ আরো ৫ বার নোবেলের জন্য মনোনয়ন পেলেও বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার ছুঁয়ে দেখা হয় নি তাপীয় আয়নীকরণ তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতার।
অভাবী সংসারে জন্মেছিলেন মেঘনাদ। আর্থিক অনটনের মধ্যেই টোলে হয় শিক্ষারম্ভ। তারপর গনিত ও ইতিহাসে তার মেধার কারনে অনেকের ভর্তি হন ইংরেজি স্কুলে। প্রাথমিক পরীক্ষায় ঢাকায় প্রথম হয়ে বৃত্তিলাভ। সেখান থেকে অনেক ঝড় ঝাপ্ট সামলে মেঘনাদ ভর্তি হন প্রেসিডেন্সি কলেজে। সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন তার সহপাঠী। প্রশান্ত চন্দ্র মহালনবিশ, আচার্য হিসেবে জগদীশ চন্দ্র বসু ও আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের মত সিনিয়রদের সান্নিধ্য লাভ করেন কলেজেই।
তিনি ও সত্যেন্দ্রনাথ বসু সর্বপ্রথম আলবার্ট আইনস্টাইনের স্পেশাল থিওরি অফ রিলেটিভিটি জার্মান থেকে ইংরাজি অনুবাদ করেন যা কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়। স্বনামধন্য এই পদার্থবিজ্ঞানী পদার্থবিজ্ঞান ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করেছেন। তিনি বিজ্ঞান সম্মত ধারায় পঞ্জিকা সংশোধন করেন।
এছাড়া ভারতের নদীনিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি ভারতে পদার্থবিদ্যার বিকাশ ও প্রসারের জন্য ১৯৩১ সালে ন্যাশনাল একাডেমী অব সায়েন্স, ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়াও ১৯৩৪ সালে ভারতে পদার্থবিজ্ঞানীদের সংগঠন ইন্ডিয়ান ফিজিক্যাল সোসাইটিও প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর উদ্যোগেই ভারতে ইন্ডিয়ান ইন্সটিউট অব সায়েন্সের সূচনা হয়, যা বর্তমানে ইন্ডিয়ান ইন্সটিউট অব টেকনোলজি (আই.আই.টি.) নামে বর্তমানে পরিচিত।