বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সন্দেশখালির মহিলাদের আর্তনাদ শোনার পর থেকে গর্জে উঠেছে গোটা বাংলা। বিক্ষোভ-প্রতিবাদ জানিয়ে রাস্তায় নেমেছে বিরোধীরা। রাজ্যপাল থেকে শুরু করে জাতীয় মহিলা কমিশন পৌঁছেছে ঘটনাস্থলে। আর এবার সন্দেশখালির (Sandeshkhali Incident) পরিস্থিতি নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির (Union Minister Smriti Irani)। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে করে বাংলার শাসকদলকে তোপ স্মৃতির।
সাংবাদিক বৈঠক থেকে স্মৃতি ইরানি বলেন, ‘মমতার গুন্ডরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হিন্দু পরিবারের অল্পবয়সী মেয়েদের ধর্ষণ করছে’। তার দাবি, ‘বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূলেরা গুন্ডারা মেয়েদের দেখে আসে। কাদের বাড়ির মেয়ে, বউ সুন্দরী, কোন মেয়েদের বয়স কম। তাদের স্বামীদের বলা হয়, স্বামী হলেও তাদের কোনও অধিকার নেই।’ নির্যাতিত মহিলারাই গণমাধ্যমের সামনে এই অভিযোগ করেছেন বলেও দাবি করে স্মৃতি।
কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, ‘সন্দেশখালির মহিলারা সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেছেন, যতক্ষণ তাদের মন না ভরবে, ততক্ষণ ওই মহিলাদের রেহাই নেই। রাতের পর রাত অত্যাচার চলত। তৃণমূল নেতাদের মন না ভরলে তাদের রেহাই মিলত না।’
বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, ‘হিন্দু পরিবারের মেয়েদের ধর্ষণের জন্য চিহ্নিত করা হত… আর এরা সকলেই শাসকদলের লোক, সবাই তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের লোক।’ অথচ এই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চুপ। এই ভাবে নিজের সাম্রাজ্য চালাচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। আর যারা এই নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাদের বিধানসভা থেকে বহিস্কার করা হয়।
প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘কোথায় শেখ শাহজাহান।’ সন্দেশখালির হিন্দু পরিবারের বিবাহিতা মহিলারা এতদিন ধরে অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছেন। তারা বলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ভয়ে পারছিলেন না। মহিলারা এখন গর্জে উঠেছে। তাদের অভিযোগ, এতদিন ধরে এই ধরনের ঘটনা পুলিশের সামনেই ঘটেছে।
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঝড়-বৃষ্টি! কাল থেকেই বিপত্তি, দক্ষিণবঙ্গের ১০ জেলায় সতর্কতা: আবহাওয়ার আগাম খবর
প্রেক্ষাপট: তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে লাগাতার অত্যাচারের অভিযোগ তুলে বুধবার থেকে রাস্তায় নেমেছে সন্দেশখালির মানুষেরা। দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। শনিবার নতুন করে ফের বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামের মহিলারা। শাহজাহান শেখ এবং তার দুই ঘনিষ্ঠ নেতা শিবু হাজরা আর উত্তমের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগে জ্বলে ওঠে গোটা এলাকা। বিশাল পরিমাণ পুলিশ বাহিনী নামিয়েও পরিস্থিতি শান্ত করা যায়নি। জারি করে দেওয়া হয় ১৪৪ ধারা। বন্ধ রাখা হয় ইন্টারনেট পরিষেবাও।
শাহজাহান, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দার-সহ একাধিক নেতাদের বিরুদ্ধে পথে নামেন সন্দেশখালির মহিলারা। তাদের অভিযোগ, শেখ শাহাজাহানের মত গ্রামে এরম আরও অনেক গুন্ডা রয়েছে, যাদের অত্যাচারে এতদিনে দেওয়ালে পিঠ ঠেকেছে গ্রামের মেয়েদের।
বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে মহিলারা বলেন, ওরা মেয়েদের কোনও সম্মান দেয়নি। মেয়েদের শেষ করে ফেলেছে। রাত সাড়ে দশটার সময়ে মেয়েদেরকে উঠিয়ে আনত পার্টি অফিসে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ায় শেখ শাহজাহানদের সহ বাকি গুন্ডাদের বিরুদ্ধে একজোট হতে বাধ্য হন সন্দেশখালির মহিলারা।
সন্দেশখালির মহিলাদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করেছে বিরোধীরা। রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মহিলা কমিশন। সোমবারই ঘটনাস্থলে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।