বাংলা হান্ট ডেস্ক : লক্ষ্যে অবিচল থেকে নিষ্ঠার সাথে পরিশ্রম করে গেলে সফলতা ধরা দিতে বাধ্য। চারিদিকে এমন ভুরিভুরি উদাহরণ আছে যাদের পরিশ্রমের সামনে মাথা নত করেছে নাম খ্যাতি যশ। এরকমই এক উদাহরণ হল বছর ১৫-র গায়ত্রী হালদার (Gayatri Haldar)। আজ তার সামনে মলিন হয়ে গেছে বিশ্বের সমস্ত ঐশ্বর্য।
পরিবার প্রতিপালনের জন্য এক কঠিন লড়াইকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল এই ছোট্ট খুদে মেয়েটি। জীবনের কৈশোর অবস্থা পার হয়নি তার আগেই সে নেমে গেছে জীবনযুদ্ধে। তার টোটো চালিয়ে (Toto Girl) সংসার চালানোর খবর নাড়া দিয়েছিল প্রতিটি মানুষকেই। আর সেই খবরটিই নজরে আসে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের (Santanu Thakur) । খবর শুনে গায়ত্রীর বাড়িতে ছুটে এলেন তিনি।
এইদিন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শান্তনু ঠাকুর জানান, তিনি গায়ত্রীর বাবার চিকিৎসার ভার তো নেবেনই পাশাপাশি দিদির পুলিশে চাকরির ইচ্ছাপূরণের জন্যেও যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। সাথে তিনি আরও জানিয়েছেন, গায়ত্রীর পড়াশোনাতেও পূর্ণ সহযোগিতা করবেন তিনি। আর তাতেই একটু আশার আলো দেখছে এই পরিবার।
নবম শ্রেণীর গায়ত্রী আবারও স্বপ্নের জাল বুনছে। এই বিষয়ে বারবার সংবাদ মাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়েছে, গায়ত্রী সহ তার মা কৃষ্ণা হালদার। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই বহু সংস্থা গায়ত্রী এবং তার পরিবারের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সবে মিলিয়ে আবারও নতুন করে বাঁচতে শিখছে এই অসহায় পরিবারটি।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর আগে পরিবারের একমাত্র রোজগেরে বাবা অলক হালদার শারীরিক অসুস্থতার কারণে বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। তারপর একপ্রকার জেদের বসেই টোটো নিয়ে রাস্তায় বের হয় গায়ত্রী। সংসারের খরচপাতি সামলে দিদির পুলিশ হওয়ার ইচ্ছেকেও এগিয়ে নিয়ে চলে সে। সেইসময় এইটুকু মেয়ের এই মনের জোর দেখে বিস্মিত হয়েছিল গোটা বাংলা।
অবশেষে তার লড়াইয়ের কাছে মাথা নত করতে হয়েছে সকলকে। প্রাথমিকভাবে নানা বিদ্রূপ কটাক্ষের শিকার হলেও এখন তার পাশে দাঁড়িয়েছে পাড়া প্রতিবেশী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থা। এমনকি স্থানীয় ঢাকুরিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারাও আজ তার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। সমস্ত দুঃখ ভুলে আজ গায়ত্রীর মুখেও ফুটে উঠেছে হাসি। এত মানুষের সহযোগিতায় একটু হলেও বুকে বল পাচ্ছে ছোট্ট মেয়েটি।