বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শৌচকর্মের জন্য গ্রামবাসীদের ছুটতে হয় মাঠে-ঘাটে কিংবা পুকুর পাড়ে। এর আগে একবার মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের (Mission Nirmal Bangla) অধীন গ্রামে শৌচাগার বানিয়ে দেওয়া হলেও, বর্তমানে সেগুলির রীতিমতো ঝরঝরে অবস্থা! দরজা ঝুলে গিয়েছে, সিমেন্ট খসে পড়েছে, প্যান ভেঙে গিয়েছে। ফলে শৌচকর্মের জন্য মাঠে-ঘাটে ছুটতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। কিন্তু এদিকে শুধুমাত্র পঞ্চায়েত প্রধানের বারর জন্যই নথিভুক্ত হয়েছে ৫টি শৌচাগার।
মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজের শৌচাগার তৈরির তালিকা ইতিমধ্যেই বানানো হয়েছে। তবে পুরুলিয়ার (Purulia) বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে সেই তালিকা নিয়েই বেশ কিছু প্রশ্ন দেখা গিয়েছে। কারণ পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির জন্যই ৫টি শৌচাগার (Toilet) নথিভুক্ত হয়েছে। বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সবিতা নামাতাও।
পুরুলিয়ার বরাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনেই পড়ে রাজা পাড়া। এই পাড়ায় ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১২০০। অতীতে একবার এখানে মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। তবে এখন সেগুলির দশা শোচনীয়। শৌচাগারের এমন অবস্থা হওয়ায় শৌচকর্মের জন্য গ্রামবাসীদের ভরসা মাঠ-ঘাট কিংবা পুকুর পাড়।
আরও পড়ুনঃ দূরদর্শনের লোগোর রঙ বদল নিয়েও ‘মিথ্যাচার’ মমতার? ‘প্রমাণ’ সহ ইতিহাস তুলে তুলোধোনা অমিত মালব্যর
এদিকে ইতিমধ্যেই মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজ চালু হয়েছে। এখানে বাড়ির মালিককে প্রথমে শৌচাগার নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। সেটি বানানো হয়ে গেলে ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে উপভোক্তাতে টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। এদিকে গ্রামবাসীরা বলছে, তাঁদের যদি নিজের পয়সায় শৌচাগার তৈরির ক্ষমতা থাকতো, তাহলে তাঁরা সরকারের মুখ চেয়ে বসে থাকতেন না। পাশাপাশি অনেকে আবার গতবারের তৈরি শৌচাগারের গুণগত মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
অন্যদিকে এই তালিকায় আবার গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির জন্য ৫টি শৌচাগার নথিভুক্ত হয়েছে। একজনের বাড়িতে কীভাবে ৫টি শৌচাগার নথিভুক্ত হল? এই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। বিষয়টি নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান সবিতাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, তিনি এতকিছু বোঝেন না। তাঁকে যা বলা হয় সেটাই করেন। পাশাপাশি গ্রামের শৌচাগারের শোচনীয় অবস্থার কথা স্বীকার করে নেন তিনি। অন্যদিকে তাঁর বাড়ির জন্য একাধিক শৌচালয় নথিভুক্তি প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার নামে, স্বামীর নামে, দেওরের নামে, শাশুড়ির নামে আছে। তবে একটাও বানাইনি। ক্ষমতা থাকলে তো বানাব’।
বরাবাজার ব্লকের BDO ঋদ্ধিবান চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা যদি ঘটে থাকে, লিখিত অভিযোগ আসলে তাহলে নিশ্চিয়ই তদন্ত করা হবে। খতিয়ে দেখার পর আইন অনুযায়ী যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এসব বিষয়ে তিনি বেশ কড়া বলে জানান ঋদ্ধিবান চট্টোপাধ্যায়।