বাংলাহান্ট ডেস্ক: মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun chakrabarty), নামটা টলিউডে যেমন পরিচিত, বলিউডেও (Bollywood) ততটাই জনপ্রিয়। মিঠুনের অভিনয় জগতের যাত্রার শুরুই বলিউডের হাত ধরে। একটা সময় হিন্দি সিনেমার জগতে রীতিমতো রাজ করেছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে এক ছবিতে অভিনয় করার জন্য মুখিয়ে থাকত তাবড় তাবড় অভিনেত্রীরা।
কিন্তু সবকিছু প্রথম থেকেই এতটা সহজ ছিল না। কলকাতা থেকে স্বপ্ন নগরী মুম্বইতে গিয়ে আচমকাই জাঁকিয়ে বসতে পারেননি মিঠুন। দিনের পর দিন, রাতের পর রাত কেটেছে স্ট্রাগল করে। ‘মৃগয়া’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েও বলিউডে প্রথম দিকে মিঠুনের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়েনি।
তবে ধীরে ধীরে নিজের প্রতিভা প্রকাশ্যে এনেছেন মিঠুন। পরিচালকরাও বুঝতে পেরেছেন তাঁর কদর। একের পর ছবিতে সুযোগ পেয়েছেন মিঠুন এবং প্রতিটি ছবিই হিট। নিজের আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে বেশ প্রতিযোগিতারও সম্মুখীন হয়েছিলেন মিঠুন। তার মধ্যে অন্যতম ছিলেন জিতেন্দ্র (jitendra)।
আসলে জিতেন্দ্রর জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ ছিল তাঁর অভিনয় ও নাচ। অপরদিকে মিঠুনও এই দুটি কারণেই খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছান। স্বাভাবিক ভাবেই নবাগত মিঠুনকে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে দেখেছিলেন জিতেন্দ্র। ১৯৮৬ সালে তিন তিনটি ছবিতে একই সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ারও করেছিলেন মিঠুন ও জিতেন্দ্র।
কিন্তু একত্রে অভিনয় করলেও জিতেন্দ্রর একটি অপমান কোনোদিন ভুলতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছিলেন মিঠুন। কেরিয়ারের শুরুর দিকে পরিচালকের দোরে দোরে ঘুরে নিজের পোর্টফোলিও জমা দিতেন মিঠুন। একদিন এমনি এক পরিচালকের কাছে গিয়ে উপস্থিত হয়েছেন তিনি।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন জিতেন্দ্রও। সেদিন মিঠুনের সামনেই অভিনেতা বলেছিলেন, “যদি কখনো মিঠুন বলিউডে নায়ক হতে পারে তাহলে আমি অভিনয় ছেড়ে দেব।” সেদিন জিতেন্দ্রর এই অপমানের কোনো জবাব মিঠুন দিতে পারেননি ঠিকই বলিউডে সুপারস্টারের তকমা পেয়ে কাজে ঠিক করে দেখিয়েছিলেন তিনি।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলত সে সময় মিঠুন ও জিতেন্দ্রর মাঝে। মিঠুনের ডিস্কো ড্যান্সার ছবিটি মেগা হিট হওয়ায় জিতেন্দ্রর থেকে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়েছিলেন মিঠুন। তবে তারপর পরই হিম্মতওয়ালা, তোফা সহ বেশ কয়েকটি সুপারহিট ছবি করে মিঠুনের সফলতা ধরে ফেলেছিলেন জিতেন্দ্র।
সাজগোজ থেকে শুরু করে বছরে ছবির সংখ্যা সবেতেই কাঁটায় কাঁটায় টক্কর চলত দুজনের মধ্যে। তবে ছবির দিক দিয়ে জিতেন্দ্রকে টেক্কাই দিয়েছিলেন মিঠুন। জিতেন্দ্রর পাঁচ দশকের ফিল্মি কেরিয়ারে মোট ছবির সংখ্যা ২২৪। অপরদিকে চার দশকের মধ্যেই ৩০০ ছবি পার করে ফেলেছিলেন মিঠুন।