বাংলা হান্ট ডেস্ক: যত দিন এগোচ্ছে ততই আমাদের দেশে খেলনা শিল্পের (Toy Industry) দ্রুত বিকাশ ঘটছে। এমনকি, সরকারও এই খাতে বিশেষ দৃষ্টি দিচ্ছে। ইতিমধ্যেই দেশে চাইনিজ খেলনা (Chinese Toy’s)-র ব্যবহার কমানোর পর এবার আন্তর্জাতিক বাজারেও চিনের সঙ্গে কড়া টক্করের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় সরকার এখন এই ক্ষেত্রের দেশীয় উৎপাদনকে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে সক্ষম করে তুলতে এই শিল্পে ৩,৫০০ কোটি টাকার PLI সুবিধার পরিকল্পনা নিয়েও কাজ করছে।
৩,৫০০ কোটি টাকার PLI সুবিধা: এই প্রসঙ্গে PTI-এর এক প্রতিবেদনে একজন আধিকারিককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সরকার ইতিমধ্যেই এই বৃহৎ পরিকল্পনার ব্যাপারে আগ্রহী। পাশাপাশি, জানানো হয়েছে, কেন্দ্র এই ক্ষেত্রে ৩,৫০০ কোটি টাকার উৎপাদনের সাথে যুক্ত PLI বেনিফিট (PLI Benifit) দেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। তবে, এই সুবিধা শুধুমাত্র তাঁরাই পাবেন যাঁরা BIS Standard মেনে চলবেন।
অধিকারিকের মতে, দেশীয় খেলনাকে প্রদত্ত PLI সুবিধার জন্য সরকার কোয়ালিটি কন্ট্রোল অর্ডার শুরু করেছে এবং কাস্টমকে ২০ শতাংশ থেকে ৬০ শতাংশে বাড়ানোর মতো পদক্ষেপগুলি দেশে নিম্নমানের আমদানি কমাতে এবং অভ্যন্তরীণ উৎপাদনকে বাড়াতেও সহায়তা করছে।
বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে সহায়তা মিলবে: PLI সুবিধা নতুন বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করতে এবং রপ্তানি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, “আমরা খেলনাগুলিতে PLI সুবিধা নিয়ে কাজ করছি। তবে এটি শুধুমাত্র BIS স্ট্যান্ডার্ডের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ খেলনাগুলিতে দেওয়া হবে। বিভিন্ন ইনভেস্টমেন্টের স্ল্যাব অনুযায়ী PLI সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। এটি ২৫ কোটি টাকা থেকে ৫০-১০০ টাকা বা ২০০ কোটি টাকাও হতে পারে।”
PLI স্কিমটি কি: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, PLI স্কিম হল এমন একটি স্কিম যার উদ্দেশ্য হল দেশীয় ইউনিটগুলিতে উৎপাদিত পণ্যের ক্রমবর্ধমান বিক্রয়ের জন্য কোম্পানিগুলিকে ইনসেন্টিভ দেওয়া। সরকার ইতিমধ্যেই ১৪ টি সেক্টরে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। এদিকে, বর্তমানে ভারতে তৈরি খেলনাগুলি এখন কেবল গ্লোবাল ব্র্যান্ডগুলিতেই সরবরাহ করা হচ্ছে না, পাশাপাশি, তারা বিশ্ব বাজারে তাদের উপস্থিতিও মজবুত করছে।
এই প্রসঙ্গে একটি রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে, নতুন প্রস্তাবের আওতায় এই ইনসেন্টিভ শুধু উপাদানের ক্ষেত্রেই নয় বরং পুরো পণ্যের জন্য প্রযোজ্য হবে। এর কারণ হচ্ছে এখনও কিছু উপাদান আমদানির প্রয়োজন রয়েছে। তবে, এই ইনসেন্টিভ ভারতের ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড বডি, BIS অনুযায়ী হবে।
প্রশংসা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত জুলাই মাসে ভারতীয় খেলনা শিল্পের প্রশংসা করেছিলেন। তিনি তাঁর “মন কি বাত” অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন যে, এর আগে ভারতে ৩,০০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের খেলনা আমদানি করা হত, যার মধ্যে এখন ৭০ শতাংশ কমেছে। এর পাশাপাশি ভারত আগে মাত্র ৩০০-৪০০ কোটি টাকার খেলনা রপ্তানি করত, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২,৬০০ কোটি টাকায়।