বাংলাহান্ট ডেস্ক:- দেশে কর (GST) ব্যবস্থাকে আরও সহজ ও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ মোদী সরকারের। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জিএসটি কাউন্সিলের (GST number Council) ৫৬ তম বৈঠকে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের জীবনে এই সিদ্ধান্তগুলি ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। বুধবার কাউন্সিলের প্রথম এই বৈঠকের পরেই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন (Nirmala Sitharaman) নতুন জিএসটি হার ঘোষণা করেন। এবার ৫ এবং ১৮ শতাংশ এই দুটি হারে জিএসটি কার্যকর হতে চলেছে। বর্তমানে ১২ এবং ১৮ শতাংশের যে হারে কর কার্যকর ছিল তা তুলে দেওয়া হল। যার ফলে বেশ কিছু পণ্যের যেমন দাম বাড়তে চলেছে সেই রকমই বেশ কিছু পণ্যের দাম কমবে বলেও জানানো হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন হারে জিএসটি কার্যকর হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
কোন কোন পণ্যে জিএসটি ছাড় (GST)
ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যের ক্ষেত্রে জিএসটি (GST) ছাড় দেওয়া হয়েছে। এতদিন আল্ট্রা-হাই টেম্পারেচার (UHT) মিল্ক, ছানা এবং পনিরের উপর ৫ শতাংশ জিএসটি ধার্য ছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এগুলির উপর কোনও কর দিতে হবে না বলে জানিয়েছে। একইভাবে পাউরুটির উপর থেকেও কর তুলে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতেও মিলেছে স্বস্তি। স্কুল-কলেজে ব্যবহৃত নকশা, চার্ট, গ্লোব, এক্সারসাইজ বুক, নোটবুক, পেন্সিল, শার্পনার, ইরেজারের মতো সামগ্রী এখন থেকে সম্পূর্ণ করমুক্ত। পাশাপাশি, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও জীবনবিমা নীতির উপর থেকেও কর তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের খরচ কমবে, অন্যদিকে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রেও সাধারণ মানুষের আর্থিক চাপ কিছুটা হালকা হবে।
আরও পড়ুন:- পুজোর আনন্দে ভাঁজ ফেলল বাড়তি বিল, Zomato-র খাবার অর্ডারে নতুন চার্জে চাপে গ্রাহকরা
নতুন এই জিএসটি (GST)-র কাঠামোতেও এসেছে বড় পরিবর্তন। এতদিন ১২ শতাংশ এবং ২৮ শতাংশের আলাদা করহার চালু ছিল। নতুন নিয়মে এই দুটি স্ল্যাব বাতিল করা হয়েছে। এখন বেশিরভাগ পণ্য ও পরিষেবা কেবলমাত্র ৫ শতাংশ বা ১৮ শতাংশ করস্ল্যাবের আওতায় থাকবে। এর ফলে করব্যবস্থা আরও সহজ ও স্বচ্ছ হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তনের ফলে মাঝারি শ্রেণির পরিবারগুলো কিছু নির্দিষ্ট পণ্য সস্তায় পেতে পারে।
আরও পড়ুন:- রাস্তায় ছড়িয়ে পাকিস্তানের নোট! রহস্যে আতঙ্ক কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ এলাকা
শুধু গ্রাহকদের জন্য নয়, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্যও নেওয়া হয়েছে ইতিবাচক পদক্ষেপ। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, জিএসটি (GST) রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ করা হবে এবং কর ফাইলিংয়ের নিয়মকে আরও সরলীকরণ করা হবে। ফলে ব্যবসায়ীরা সহজেই রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন এবং নিয়মিত কর সংক্রান্ত কাজও কম জটিল হবে।
অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রকে করমুক্ত (GST) করা এবং করস্ল্যাবের সংখ্যা কমানো কেন্দ্রীয় সরকারের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। সরকারের লক্ষ্য হল দেশের করব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজানো যাতে তা সাধারণ মানুষের জন্য অনুকূল হয়, ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে আরও গতি দেয়। নতুন সিদ্ধান্তে করের ভার কমবে, স্বচ্ছতা বাড়বে এবং ভোক্তা থেকে ব্যবসায়ী—সব পক্ষেরই প্রত্যক্ষ উপকার হবে।