যে দেশ এক সময় মহিলা সন্মান রক্ষার জনক রামায়ন, মহাভারতের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে, সেই দেশ আজ ধর্ষণকাণ্ডের পর শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করেই থেমে যাচ্ছে। ভারত দেশে মানুষের চরিত্র সর্বশ্রেষ্ঠ বলে বিশ্বে খ্যাতি ছিল। তবে এখন সেই ভারত দেশেই মহিলাদের সম্মান লুটতে দেখা যাচ্ছে তথা দেশের মেয়েদের ধর্ষণের শিকার হতে হচ্ছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।সমাজকে এই নোংরা পরিস্থিতি থেকে বের করে আনার জন্য দেশের মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই সরকারকে চাপ দিতে শুরু করেছে। তবে সরকারের সাথে সাথে জনগণকেও নিজস্ব কিছু দায়িত্ব পালনের উপর মনযোগ দিতে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞর।
RSS এর তরফ থেকেও এর উপর এক বড়ো বিবৃতি সামনে এসেছে। হায়দ্রাবাদের গণধর্ষণের ঘটনার পরে, স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) সরসঙ্ঘচলক মোহন ভাগবত (Mohan Bhagwat) মহিলাদের প্রতি পুরুষদের আচরণ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়ে একটি বড় বক্তব্য দিয়েছেন। ভাগবত তার আলোচনায় জোর দেন ও বলেন যে পুরুষদের কীভাবে নারীদের সাথে আচরণ করা যায় তা বোঝার এবং শেখার প্রয়োজন। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত গীতা মহোৎসব অনুষ্ঠানে তিনি বলেন যে মহিলাদের প্রতি কীভাবে আচরণ করা উচিত সে বিষয়ে পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে শেখা উচিত। তিনি বলেন যে সরকার আইন তৈরি করে তবে তা কার্যকরভাবে লাগু করা উচিত।
কর্মসূচির ভাষণে সঙ্ঘ প্রধান বলেন, “প্রশাসনের শিথিলতা আর চলতে পারে না। তবে প্রশাসনের উপর সব ছেড়ে দিলে হবে না। যাঁরা অপরাধ করবে, তাঁদেরও মা-বোন আছে, কেউ তাদের এটা শেখায়নি।সবাইকে নিজের বাড়ি থেকে শুরু করতে হবে। পুরুষদের তাদের মাতৃশক্তির দিকে তাকানোর দৃষ্টি শুদ্ধ হওয়া উচিত, এটি এই সমস্ত বিষয় বন্ধ করে দেবে। দিল্লির লাল কেল্লায় হিন্দুদের পবিত্র গ্রন্থ গীতা নিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জনার্দন ত্রিবেদীও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা এবং হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টার উপস্থিত ছিলেন।
জানিয়ে দি এর আগে কেন্দ্র সরকার কম বয়সী ধর্ষকদের সাজা দেওয়ার জন্য আইন পরিবর্তন করার প্রয়াস করেছিল। তবে সেই সময় বিরোধীদের কারণে সরকারকে হারের সম্মুখীন হতে হয়েছিল। এখন সরকার পুনরায় ধর্ষণকান্ড নিয়ে নতুন আইন আনার উপর বিচার করবে কিনা তাই নিয়ে প্রশ্নঃ উঠেছে। হায়দ্রাবাদে ধর্ষণের ঘটনার পরে ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষ এই মামলার সকল আসামিকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি করছেন। রাজ্য সরকারের উপর ভরসা না করে জনগণ সরাসরি কেন্দ্রের উপর চাপ সৃষ্টি করেছে কঠোর আইন আনার জন্য। যদিও কেন্দ্রের তরফে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য সামনে আসেনি। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ঘটনাটিকে ফাস্টট্র্যাকে চালানো হবে।